মোসাদ র ও অন্যান্য
যুগ যুগ ধরে গোয়েন্দাগিরিকে যুদ্ধের একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কৌশল হিসেবে ধরা হয়। রাষ্ট্র নিজস্ব স্বার্থ হাসিল করতে, শত্রুর উপর আধিপত্য কায়েম করতে অথবা নিজেকে নিরাপদ রাখতে এই টেকনিক ব্যবহার করে থাকে। পূর্বে সাম্রাজ্যগুলুর লড়াইয়ে এই কৌশলের সীমিত প্রয়োগ আমরা দেখতে পেতাম, আর আজ আধুনিক যুগে রাষ্ট্রের সবচে গুরুত্বপূর্ণ সেক্টর হয়ে দাঁড়িয়েছে এটা। বলা যায় বর্তমান যুগের প্রতিটি উন্নত রাষ্ট্র টিকে আছে গোয়েন্দাদের উপর ভর করে। তথ্য সংগ্রহ করা, মনিটরিং করা, প্রক্সিযুদ্ধ করা কিংবা শত্রু রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে 4th & 5th Generation যুদ্ধ পরিচালনা করা, সবই করে থাকে গোয়েন্দারা। গোয়েন্দা ব্যবস্থাকে রাষ্ট্রের ছায়া সরকারও বলা যায়। গোয়েন্দারা হল রাষ্ট্রীয় বাহিনীর চোখ ও কান।
গোয়েন্দা কী, গোয়েন্দারা কীভাবে কাজ করে, কেন গোয়েন্দাগিরি গুরুত্বপূর্ণ, ইসলামে এটার বিধান কী, গোয়েন্দাদের বৈশিষ্ট্য, প্রশিক্ষণ, অবদান সহ গোয়েন্দা এবং গোয়েন্দাগিরি আদ্যপান্ত এই গ্রন্থে আলোচনা করা হয়েছে।
বিশ্বের সেরা গোয়েন্দা সংস্থা বিশেষ করে ইসরাইলের ‘মোসাদ’ এবং ভারতের র’ এর ইতিহাস, সফল ও ব্যর্থ মিশন এবং বর্তমান অবস্থাসহ ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে আপনার হাতে থাকা এই গ্রন্থে।
বাংলা ভাষায় লিখিত গোয়েন্দা বিষয়ক সবচে বড় কলেবর এই গ্রন্থ। যা আপনাকে নিয়ে যাবে এক অদ্ভুত শিহরণ জাগানিয়া, রহস্যময় গোয়েন্দা জগতে। অবিশ্বাস্য হলেও তার প্রায় প্রতিটি বর্ণনা সত্য। বর্ণনাগুলো বিশ্বের বাঘা বাঘা গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের অবসর জীবনে লিখিত বইয়ের অনুবাদ কিম্বা কোনো সাংবাদিককে একান্ত সাক্ষাৎকারে অকপটে বলা বাস্তব ঘটনাচিত্র।
চুম্বকাংশ….
“….১৯৬৫ সালের দিকে অমিত তার আত্মজীবনীতে লিখেন “…আমাদের স্বপ্ন বাস্তব হতে চলেছে। অবিশ্বাস্য ঘটনা ঘটেছে। উত্তর ইরাকের বিদ্রোহী নেতা মোল্লা মোস্তফা বারজানীর তাঁবুতে ইসরাঈলী সরকারি প্রতিনিধি ঢুকতে সক্ষম হয়েছে। তাদের কুর্দিস্তানে অবস্থানকে বিশাল সাফল্য হিসেবে দেখা হলো। ইরাকের প্রধান ফ্যাক্টর হলো এই কুর্দিরা। এই একগুয়ে সম্প্রদায়ের সঙ্গে এই প্রথমবারের মতো ইসরাঈলের একটা যোগসূত্র সৃষ্টি হলো। কুর্দিরা ইরাকী রাষ্ট্রযন্ত্রের বিরুদ্ধে লাগাতার যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। কুর্দিরা ছাড়া ইরাকের আর দুটি ফ্যাক্টর হলো শিয়া ও সুন্নীরা। বারজানীর নেতৃত্বাধীন কুর্দিরা ইরাকের অভ্যন্তরে ব্যাপক এলাকা নিয়ন্ত্রণ করে। মোসাদ যদি কুর্দি বিদ্রোহীদের মদদ দিয়ে আরো শক্তিশালী করতে সমর্থ হয়, তবে অভ্যন্তরীণ শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষায় ইরাককে আরো ব্যতিব্যস্ত থাকতে হবে। ফলে ইরাকের শক্তি ক্ষয় হবে এবং ইসরাঈলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার সক্ষমতা হ্রাস পাবে। কুর্দিদের সঙ্গে এই আঁতাত ইসরাঈলের পক্ষে আশীর্বাদ হয়ে উঠবে।
বি:দ্র: মোসাদ র ও অন্যান্য বইটি free pdf download করিতে চাহিয়া লেখকদের নিরুৎসাহিত করিবেন না
saad rayhan –
বইটি আমি পড়েছি এবং মুগ্ধ হয়েছি।কিছুটা আশ্চর্য ও লেগেছে।কি করে এতো প্রমাণ সমৃদ্ধ বই এ বিষয়ে লিখে ফেললেন?
নিঃসন্দেহে গোয়েন্দা বিষ্যে লিখতে হলে প্রচুর পরিমাণ রেফারেন্স প্রয়োজন। আর সেটা এই বইয়ে বিদ্যমান। এ বইয়ে অন্য আরেকটি বইয়ের রেফারেন্স খুব বেশি টানা হয়েছে।বাংলাদেশ সামরিক প্রাধানদের চোখে র নিয়ে।আমি সেটা ও পডেছি।দুটো বই একসাথে বিবেচনায় নিলে এ বইটি অর্থাৎ মোসাদ র ও অন্যান্য টা আমার চোখে সেরা।দুই কারণে, এক,বইটির বক্তব্য গোছালো। দুই,বইটি কোন রাজনৈতিক আদর্শ বহন করেনি।অপরপক্ষে ওই বইটিতে বিএনপির আদর্শ প্রতিয়মান।সে হিসেবে নিরপেক্ষ আলোচনা হয়েছে।
আর একটু খারাপ লেগেছে দুজন মোসাদ প্রধান যে বই লিখেছেন সেখান থেকে প্রচুর তথ্য লেখক সংগ্রহ করেছেন।যাদের বিরুদ্ধে লেখা তাদের থেকে তথ্য সংগ্রহ করা বেমানান।
বাংলাদেশ সৃষ্টি নিয়ে র-র কর্মকাণ্ড বিস্তারিত আলোচনা হয়নি।সেটা প্রয়োজন। কারণ র-কে অবহেলা করার কোন কারণ নেই।এটি বর্তমানে নীতিনির্ধারকের ভুমিকা পালন করছে।এমনকি আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রেও এর প্রভাব স্পষ্ট।
ইনসাইড র।বইটি থেকে ভালো উদাহারন পেশ করা যায়।
সর্বোপরি বইটি ভালো হয়েছে।গোছালো ও সুন্দর হয়েছে।
তুরস্ক আর মধ্যপ্রাচ্যের সম্পর্ক কিংবা বানিজ্যিগত কূটনীতিক গোয়েন্দাবৃত্তিও আলোচনায় আসতে পারতো।কারন বিশ্ব মোড়লের ভুমিকাটি আমেরিকাকে ধরে রাখতে হলে অবশ্যই গোয়েন্দাগত তৎপরতা থাকতে হবে।চীন অবশ্যই তার প্রতিদ্ধন্ধি বরাবরের মতো। তাই এটি আলোচনার যোগ্য।মুসলমানদেরকে বানিজ্যিক ভাবে কোনঠাসা করাও এর উদ্দেশ্য নেয়া যায়।
যাই হোক আশা করছি আগামী পরিমার্জনে বইটি আরো আরো আলোচনায় সমৃদ্ধ হবে।
ধন্যবাদ।
রায়হান।
১.১২.২০২০ইং।