জোছনাফুল
জোছনা কি কখনো ফুল হতে পারে? ফুলটা দেখতে কেমন? এই ফুলের সুবাসই বা কীভাবে নিতে হয়? ‘জোছনাফুল’ সেই রহস্যের সুলুক সন্ধানে নামবে আপনার সাথে।
বইটা আপনাকে শুধু জোছনারাতের আসরে বসিয়ে রাখবে না; চন্দ্র-সূর্যকেও টেনে নিয়ে আসবে জীবনের পাঠশালায়। আপনি হবেন সেই পাঠশালার অংশীজন। সমুদ্রের পাড়ে কুড়াবে ভাবনার ঝিনুক, ঝিনুক থেকে বের করে আনবে বিশ্বাসের মুক্তো, আপনি সেই মুক্তোয় গাঁথবেন ভালোবাসার মাল্য।
‘জোছনাফুল’-এর বাগানে ফুটেছে আরও অনেক ফুল, এসেছে আরও অনেক ভ্রমর, গেয়েছে আরও অনেক পাখি। ফুল-পাখিদের এই কোলাহলে জীবনের অর্থ খুঁজে বেড়ায় কিছু চঞ্চল মৌমাছিও। সুন্দরের পরাগে ফুল ফোটানো, অসুন্দরের গায়ে হুল ফোঁটানো সেইসব মৌমাছিদের সাথেও জমবে আপনার নিবিড় আলাপন।
বি:দ্র: জোছনাফুল বইটি free pdf download করিতে চাহিয়া লেখকদের নিরুৎসাহিত করিবেন না
Rasel –
জোছনাফুল- আবদুল্লাহ মাহমুদ নজীব
“বিশ্বাসী মানুষ তাদের খামখেয়ালিপনাকেও বিশ্বাসের দর্পনে দেখে”- উক্তিটি এতদিন ধরে লালন করা ভাবনার রাজ্যে রীতিমত একটা সুনামি বয়ে দিয়ে যায়। উদীয়মান তরুণ লেখক আবদুল্লাহ মাহমুদ নজীব এর জোছনাফুল বইটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সবার ভাবনাকে প্রতিক্ষণে একটা প্রবল ঝাঁকুনি দিয়ে যাবে – পাঠক মাত্রই এ কথা স্বীকার করতে বাধ্য হবেন।
“হৃদয়ের খোরাক পেতে কুরআন পড়ি, পথচলার জ্বালানি সঞ্চয় করি হাদিসের পাতা থেকে, আনন্দ খুঁজে বেড়াই বিশ্ব সাহিত্যের নানা অলি-গলি ঘুরে”।পুরো বই জুড়ে লেখকের এই কথার প্রমাণ খুঁজে পাওয়া যায়। ভাবনাকে প্রকাশের জন্য লেখক যেমন কুরআন ও হাদীসের উদ্ধৃতি করেছেন, তেমনি বিশ্ব সাহিত্যের নানা প্রতিথযশা লেখকের কথাও তুলে ধরেছেন অপরূপ মুনশিয়ানায়।
বাংলা, ইংরেজি, আরবি, ফারসি, উর্দু সাহিত্যের বিভিন্ন দিকপালের নানা বচনের সংযুক্তি প্রতিটি গল্পকে আরো প্রাণবন্ত করে তুলেছে। বাংলা সাহিত্যের নীলরত্ন হালদার, রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, জসীম উদ্দিন, আল মাহমুদ, জগদীশচন্দ্র বসু, নির্মেলেন্দু গুণ, ফররুখ; ইংরেজি সাহিত্যের সিলভিয়া প্লাথ, আলেকজান্ডার পোপ, জন ডান, ডারওয়েন্ট কোলরিজ, রবার্ট হেরিক আরবি সাহিত্যেরকবি জুহাইর, আদহাম শারকাওয়ি, উর্দু সাহিত্যের আল্লামা ইকবাল, কবি তকি মির, পারস্যেরমির্জা গালিব সহ আরও প্রাজ্ঞ মনীষীদের বচন লেখকের বর্ণনায় নতুন করে প্রাণ খুঁজে পেয়েছে।
‘মেনে নেব এ আমার ঈদ’, ‘আয়না ভাঙার ডাক’, ‘আল-মুকাদ্দিমাঃ অন্যপাঠ’, ‘মিশন জিন্নুরাইন’, ‘এক ফোটা আবেহায়াত’, ‘শেকড় ভোলার দায়’, ‘বাইশ জানুয়ারি’, ‘ফ্রিল্যান্সিং’, ‘সাশ্রু’, ‘জোছনাফুল’, ‘সূর্যশৌর্য’, ‘নীলমিল’, ‘কেন সাহিত্য পড়ি’ – শিরোনামের গল্পগুলো লেখকের বাস্তব জীবনের অনুভূতি প্রকাশক আলেখ্য হলেও প্রতিটি গল্পে রয়েছে ভাবনাকে তাড়িত করার এক অনুপম প্রাণনা। অল্পকথায় এর বর্ণনা এখানে তুলে ধরা সম্ভব নয়। তবে এতটুকু বলতে পারি, পরিশীলিত ও শুদ্ধ জীবনের সুধা পান করতে ইচ্ছুক পাঠক এই গল্পে তৃষ্ণা নিবারণের অনেক দাওয়াই পাবেন।
আহমদ ছফা আরবি ভাষা ও সাহিত্য’ শিরোনামের একটি প্রবন্ধে লিখেছিলেন, “ এখনো বয়সে যারা তরুন তাদের উচিত এই মহান সমৃদ্ধ আরবি ভাষাকে আয়ত্ত করার জন্য যত্নবান হওয়া”। তরুণ এই লেখক যেন সেই আহ্বানে আরবি ভাষাকে আয়ত্ত করে চলেছেন। লেখকের বিভিন্ন বই পড়ে আমার তাই মনে হয়েছে। শেষরাত্রির গল্প, বৃষ্টিমুখর রৌদ্রমুখর, তারাফুল, সবুজ রাতের কোলাজ, সবুজ চাঁদে নীল জোছনা বই প্রতিটি বই এর মাঝে উল্লিখিত বিভিন্ন তথ্য আরবি সাহিত্যের প্রাচুর্যের ইঙ্গিত বহন করে।