মহানবী
মহানবী খাদীজার শূন্য হৃদয়-উদ্যানে বসন্তের পরশে প্রস্ফুটিত হলো প্রাপ্তির অসংখ্য ফুল। সেই ফুলের সুবাসে জীবন ও জীবনে জড়িয়ে আছে যত বেদনা, সব হয়ে গেলো সুবাসিত! খাদীজার আনন্দের সীমা ছিলো না। মুহাম্মাদকে তিনি যে কী করবেন, কীভাবে যে তাঁর যত্ন নেবেন, তা ভেবে শেষ করতে পারতেন না! খাদীজার অথৈ ভালোবাসার কোনো কূল ছিলো না।
তাঁর গম্ভীর চরিত্রে ফুলের কোমলতা, তাঁর সুন্দর দেহে আশ্চর্য সৌরভ, তাঁর চমৎকার মৃদু হাসিসহ তাঁর সবকিছু খাদীজা যতই দেখেন, প্রতিবার নতুন করে তাঁর প্রেমে পড়েন। তিনি তাঁর চারপাশের পুরো জগৎ থেকে ভিন্ন। সকল অহেতুক রীতিনীতি, সকল কোলাহলমুখর অসভ্যতা, অকারণ উৎসব-হাঙ্গামা, কিছুতেই তিনি কখনো জড়ান না।
কুরাইশরা মদপান করে, রাস্তায় রাস্তায় সাজানো আছে পানশালা, কিন্তু তিনি মদপান করেন না। মূর্তির বেদিতে বলিকৃত পশুর গোশত খান না। কুরাইশরা মূর্তির পায়ের কাছে জড়ো হয়ে অনুষ্ঠান করে, অথচ তিনি মূর্তিপূজা ঘৃণা করেন। তারা তাদের কাপড় খুলে কাবা তাওয়াফ করে, তিনি শালীনতা বজায় রাখেন। তাঁর চরিত্র তাদের সকলের চেয়ে সুন্দর। তাঁর মর্তবা তাদের সকলের চেয়ে বড়। তাঁর ধৈর্য ও সহনশীলতা তাদের সকলের চেয়ে বিশাল। তাদের সবার মধ্যে তাঁর কথাই সত্য। তাঁর স্বভাব সবচেয়ে পেলব ও কোমল। তাঁর হৃদয়ই অধিক পবিত্র। ভালো কাজে তিনিই সবার আগে থাকেন। তিনিই সর্বাধিক অঙ্গীকার পূরণকারী, প্রতিশ্রুতি রক্ষাকারী। তিনিই তাদের মধ্য সবচেয়ে বড় আমানতদার।
খাদীজা নিজের বিশাল ধনভাণ্ডার তাঁর হাতে তুলে দেন। খাদীজা নিজের তনুমন তাঁর পায়ের কাছে লুটিয়ে দেন।
তাঁর মতো কেউ নেই। আকাশের মেঘ তাঁকে ছায়া দান করে। তরুলতা, বৃক্ষরাজি তাঁর সামনে মাথা নত করে। খাদীজাও মেঘ হয়ে তাঁর ছায়া হন। ফুল হয়ে তাঁর জন্য কোমল হন। বসন্তের সৌন্দর্য হয়ে তাঁর মনকে দোলা দেন। বিশ্বাসী হয়ে তাঁর সঙ্গী হন, হৃদয়ের স্পন্দন হয়ে সব সময় তাঁর সঙ্গে থাকেন। আর তিনিও খাদীজাকে মনপ্রাণ দিয়ে ভালোবাসেন। তাঁর জীবনের প্রথম নারী, তাঁর প্রথম প্রেম খাদীজা! পৃথিবী মুগ্ধ হয়ে দেখে তাঁদের ঘরের চৌকাঠে, জানালার খড়খড়িতে সারাক্ষণ লেগে আছে ভালোবাসার উৎসাহী অনুষ্ঠান! …
বাকিটা পড়ুন ‘মহানবী সা.’ গ্রন্থে।
বি:দ্র: মহানবী বইটি free pdf download করিতে চাহিয়া লেখকদের নিরুৎসাহিত করিবেন না
ইমরোজ ইতি –
মহানবী
মহানবী সা. এক ভালোবাসার নাম, যা প্রত্যেক মুসলমানের হৃদয়ে বিরাজ করে।
তার ব্যাপারে আমার জ্ঞান অনেক অপ্রতুল ছিলো,
আমি তার ব্যাপারে সবার কাছেই জানতে চাইতাম, কিন্তু আমি খেয়াল করলাম যে কেউই আমাকে তার জীবনবৃত্তান্ত বলতে পারছে না। পারবেই বা কীভাবে? আমি তো এতটা সৌভাগ্যবতী নই, কারণ আমার জন্ম সাধারণ মুসলমানের ঘরে হয়েছে। কোনো আলেম, মাশায়েখের ঘরে হয়নি। নিজেকে খুব অসহায় লাগতো যে, আমি যার সম্বন্ধে জানতে আগ্রহী তার বিষয়ে জানতে পারছিলাম না। আমি মুহাম্মাদ সা. এর সম্পূর্ণ জীবনী নামক কয়েকটি বইও পড়েছিলাম, কিন্তু ওখানেও এত নিখুঁতভাবে সম্পূর্ণ জীবনী ছিল না, কয়েকটি বিক্ষিপ্ত ঘটনা ছাড়া, যার ফলে আমার অন্তরের সেই অপূর্ণ আশা মিটেনি।
একদিন ফেসবুকে বিভিন্ন পোস্ট দেখছিলাম, হঠাৎ আমি একটা প্রতিযোগিতার পোস্ট দেখি। সেখানে আমি আন্দাজেই উত্তরটা দেই, কিন্তু আল্লাহর অশেষ রহমতে উত্তরটা হয়ে যায় এবং আমি বিজেতাদের একজন নির্বাচিত হই। আমি তখন খুশিতে আত্মহারা,শুধু আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করছিলাম। আমি যা মন থেকে আল্লাহর কাছে চাইছিলাম তা আল্লাহ কারো উসিলায় আমার কাছে পৌঁছে দিয়েছেন। বারবার এটাই মনে হচ্ছিল আমার।
আলেমা মাজিদা রিফাকে আল্লাহ অনেক ইলম দান করেছেন, তার উপর আল্লাহর অশেষ রহমতে উনি এত সুন্দর করে মহানবী সা. এর জীবনী উপস্থাপন করেছেন যে, এর প্রতিটা পৃষ্ঠা পাঠ করার সময় কখনো আমি আনন্দে আপ্লুত হয়েছি, কখনো অজান্তেই চোখের পানি ঝরেছে। এটা আমার কল্পনার বাইরে ছিল যে, এত সুন্দর করে ইতিহাস উপস্থাপন করা সম্ভব।
একজন মুসলমান হিসেবে মহানবী সা. এর জীবনী জানা অত্যাবশ্যক, আর আমার মনে হয় এই বইটা এক্ষেত্রে অতি সহায়ক হবে।
আমি জানি না একটা বইয়ের রিভিউ কীভাবে লিখতে হয়, কিন্তু বইটি পড়ে এতটাই আবেগাপ্লুত হয়েছি যে, কিছু লেখার জন্য কলম হাতে তুলে নিয়েছি। কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি এই বইয়ের লেখিকা ও প্রকাশকের প্রতি।
আল্লাহর অশেষ রহমত যে তিনি আমাকে বইটি পড়ার তৌফিক দিয়েছেন। জাযাকুমুল্লাহু খাইরান।