পড়তে ভালোবাসি
পড়তে ভালোবাসি বইয়ের বিষয় সমূহ
-পড়া নিয়ে কিছু কথা
-জীবনের জন্য পড়া
-সিরাত থেকে প্রথম শিক্ষা
-সিরাত থেকে দ্বিতীয় শিক্ষা
-দুটো সমস্যা ও সমাধান
পড়াকে ভালোবাসতে শেখার পদ্ধতি
-লক্ষের প্রতি সজাগ দৃষ্টি রাখা
-পড়ার পরিমাণ নির্ধারণ করা
-পরিমিত ধীরতে
-একাগ্রতা
-নিয়ম ও শৃঙ্খলা
-পারিবারিক পাঠাগার গড়া
-পঠিত বিষয় অন্যের কাছে উপস্থাপন করা
-পড়ার ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতা
-আলেমদের থেকে শেখা
কী পড়বো
-পড়াশোনার দশটি মৌলিক বিষয়
-কোরআনুল কারিম
-হাদিসুর রাসূল সা
ধর্মের বিধান
-পাঠ্যবিষয়ে বিশেষজ্ঞতা অর্জন
ইতিহাস পাঠ
-বিশবের বিভিন্ন চলমান ঘটনা পাঠ
-অন্যদের মত, মতবাদ ও মন্তব্যগুলো পড়া
-ইসলাম সম্পর্কে অপবাদ ও তার প্রতিরোধ
-শিশুবিষক লেখা পাঠ
-চিত্তবিনোদনমূলক পাঠ
মাকতাবাতুল হাসানের সকল বই পেতে ভিজিট করুন
বি:দ্র: পড়তে ভালোবাসি বইটি free pdf download করিতে চাহিয়া লেখকদের নিরুৎসাহিত করিবেন না
Muhammad Abu Abdullah –
পড়তে ভালোবাসি
ড. রাগিব সিরজানি একাধারে লেখক, গবেষক, ইতিহাসবিদ, দাঈ ও ডাক্তার। মিশরীয় এ লেখকের অনূদিত বেশ কিছু বই যেমন তাতারীদের ইতিহাস, আন্দালুসের ইতিহাস ইত্যাদি বাংলায় অনুবাদ হয়ে প্রকাশিত হয়েছে এবং ইতিমধ্যে পাঠকপ্রিয়তাও লাভ করেছে।
বই পড়ার গুরুত্ব,প্রয়োজনীয়তা ও উপায় নিয়ে অতি সহজ, উপকারী ও সংক্ষিপ্ত আলোচনায় এ বই সাজানো। বইয়ের প্রারম্ভিকায় অনুবাদক বই পড়ার গুরুত্ব নিয়ে সংক্ষেপে আলোচনা করে মুসলমান হিসেবে আমাদের বই পড়ার গুরুত্ব তুলে ধরেন, আমাদের বই পড়ার অনীহা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে মুজতবা আলীর রচিত রম্যগল্পেরও অবতারণা করেন যা ভালো লেগেছে।
শুরুতেই লেখক সিরাত থেকে দুটি ঘটনা তুলে এনে মুসলমানদের বই পড়ার প্রয়োজনীয়তা আলোচনা করেছেন। আমরা বই পড়ব, আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যে৷ আল্লাহর নির্দেশ মেনে।দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণের জন্যে। বিদ্যা যেন আমাদের অহংকারী না করে।
মুসলমানদের পড়াশোনার কত সমৃদ্ধ ইতিহাস! আর আফসোস, এখন আমরা দুনিয়াবি শিক্ষায় বড় বড় ডাক্তার, প্রফেসর হয়েও ওযুর মাসলা জানিনা!
লেখক এখানে বই না পড়ার দুটি সম্ভাব্য কারণ তুলে তার সমাধান আলোচনা করেছেন। সমস্যা দুটিঃ ১. অনেকে বই পড়তে অভ্যস্ত না। ২. অনেকে আজেবাজে বই পড়ে সময় নস্ট করে।
প্রথম সমস্যার জন্যে লেখক পড়াকে ভালোবাসতে শিখার দশটি উপায় তুলে ধরে আলোচনা করেছেন, যা এ বইয়ের প্রাণ।
প্রথম সমস্যার সমাধানঃ
১. লক্ষ্য স্থির করাঃ কারণ, এটি সফলতার মূলমন্ত্র। এতে পড়াকে উপভোগ করা যায় ও উদ্যমী হওয়া যায়।
আমি পড়বঃ
i)আল্লাহর আদেশ মেনে,
ii)দুনিয়া ও আখিরাত উভয় জগতে উপকার পেতে,
iii) নিজের ও আশপাশের মানুষকে উপকৃত করতে
iv) নিজ জাতিকে উপকৃত করতে
v)উম্মাহর মাঝে জাফরণ সৃস্টি করতে
vi)আল্লাহর নিকট হতে প্রতিদান পাবার আশায়
২. পড়ার পরিমাণ নির্ধারণঃ আগামী কয়েকমাসে কোন বইগুলো পড়ব তা নির্ধারণ করা। লিস্ট মেনে চলা। না মানতে পারলে কারণ খোঁজা যে কেন হলনা। মাস শেষে বিরতি দেয়া।
৩. পড়ার সময় নির্ধারণঃ এমন সময়ে বই পড়া যখন মাথা সতেজ থাকে, কাজের চাপ না থাকে। যেমন- সকালে ব রাতে। কাজের ফাকের সময়গুলোতেও পড়া। সবসময় সাথে পড়ার জন্যে কোন না কোনও বই রাখা।
৪. পরিমিত ধীরতাঃ সারাদিন না পড়া, গ্যাপ দেয়া। ধীরস্থিরভাবে প্রতিনিয়ত পড়া।
৫. একাগ্রতাঃ বুঝে বুঝে পড়া। মনোযোগ দেয়া। নোট নেয়া। যাতে অপরকে বলা যায় কি শিখলাম। কিছু বুঝতে না পারলে বা আপত্তি থাকলে আলেমদের শরণাপন্ন হওয়া৷
৬. নিয়ম মেনে পড়াঃ ডায়েরিতে সারবস্তু সুন্দর করে লিখে রাখা। সুবিন্যস্ত নোট রাখা।
৭. পারিবারিক লাইব্রেরি করাঃ বাইরে খাওয়া/ পিকনিকের খরচ বাচিয়েও চাইলেই বাসায় মধ্যম মানের লাইব্রেরি বানিয়ে ফেলা যায়।
৮. অন্যকে পঠিত বিষয় জানানোঃ এতে পঠিত জ্ঞান মাথায় ভালোভাবে বসে যাবে। অন্যকে উপকৃত করা যাবে। নেকিয়ে জারিয়াহ হবে। আল্লাহতালা জ্ঞানকে সমৃদ্ধ করে দিবেন৷
৯. স্টাডি সার্কেল বানানোঃ কয়েকজন মিলে বসা। কে কি পড়ল তা আলোচনা করা। এতে জ্ঞান শক্ত হয়। আগ্রহে ভাটা পড়েনা।
১০. আলেমদের থেকে শিক্ষাঃ মাশোয়ারা করা। কি পড়বেন তার লিস্ট আনা। পড়তে কোথাও খটকা লাগলে জেনে।
নেয়া।
দ্বিতীয় সমস্যার সমাধানঃ
বইটি শেষ হয়েছে আমরা কি ধরনের বই পড়ব তার কিছু সাজেশন দিয়ে। এখানে দশ ধরনের মৌলিক বই পড়তে উৎসাহ দেয়া হয়েছেঃ
ক) আল কুরআনঃ সবসময় পড়া
খ)হাদিসের বইঃ রিয়াদুস সলিহীন, লু’লু ওয়া আল মারজান, সহীহ বুখারী/মুসলিম ইত্যাদি দিয়ে শুরু করেন।
গ)মৌলিক কিছু ইসলামী বইঃ যেমন তাফসীর ইবনে কাসির, আর রাহিকুল মাখতূম, আলোর কাফেলা, মুসলিম উম্মাহর পতনে বিশ্ব কী হারাল, আমাদের সভ্যতার শ্রেষ্ঠ কাজগুলি ইত্যাদি।
ঘ) দুনিয়াবি জ্ঞানের বইঃ যা দুনিয়াবি বিষয়ে জ্ঞান বাড়াবে, বিশেষজ্ঞ করে তুলবে।
ঙ)সাম্প্রতিক বিশ্ব নিয়ে পড়া
চ)সব ধরনের মত নিয়ে জানা, পলিটিক্স নিয়ে পড়া
ছ)ইসলাম সম্পর্কে অপপ্রচার এর জবাব নিয়ে লেখা বিখ্যাত বইগুলো পড়া
জ)শিশু লালনপালন নিয়ে পড়া
ঝ) চিত্তবিনোদনমূলক বইও মাঝে মাঝে পড়া। তবে এতে যাতে অনৈসলামিক কিছু না থাকে এবং খুব বেশি সময় না পড়ি। ভারী, জটিল বই পড়ে ক্লান্ত হলে মাঝে সাঝে মনকে হালকা করতে পড়া।
মোটামুটি এই ছিল এ বইয়ের আলোচনা। অনুবাদ প্রাঞ্জল ছিল। বইটি উপকারী। আমার তো মনে হয়, বই পড়েন বা পড়তে আগ্রহী এমন সবারই পড়তে ভালোবাসি এই বইটি পড়া উচিত।