মুক্তিযুদ্ধের বয়ানে ইসলাম
৯ টি মাস এদেশের সাধারণ মানুষের রক্ত,ঘাম, পরিশ্রম, সম্ভ্রম, অর্থ ও ত্যাগের বিনিময়ে যেই মুক্তি, যেই স্বাধীনতা আমরা পেয়েছি তাই তো ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ। আজ আমরা যারা নবীন তারা যুদ্ধ দেখিনি কিন্তু আমাদের ও ৭১ নিয়ে জ্ঞানের অভাব নেই, আমরা ও গবেষণা করি, আমরা আমাদের চেতনা রক্তে ধারণ করি।
কিন্তু যেই চেতনা রক্তে ধারণ করি তা কতটুকু শুদ্ধ? কতটুকু ইতিহাস নির্ভর?
ভেবে দেখেছি কি?
মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আমাদের দেশে একটা বয়ান হাজির আছে। সেই বয়ানে ইসলাম অনুপস্থিত। আমাদের বিশ্বাস করতে বাধ্য করানো হয়েছে ইসলাম মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষিতে অপ্রাসঙ্গিক ছিল। মুক্তিযুদ্ধ শুধুমাত্রই জাতিগত মুক্তির লক্ষ্যেই সম্পাদন হয়েছিল। কিন্তু আরেকটি জিনিস অলিখিত ই থেকে গেল…
ইসলামের নামে পাকিস্তান তৈরি হলেও এই পাকিস্তান সরকার এর মুনাফিকি এদেশের ধর্মপ্রাণ মানুষ বুঝে গিয়েছিল ততদিনে। কিন্তু ধর্মকে ব্যবহার করেই অধর্ম করতে পাকিস্তান সরকার পিছপা হয়নি। বাঙালীদের দমন পীড়ন শুরু হয়ে গেল সব ক্ষেত্রে এবং অনিবার্য ফলাফল হিসেবে ৭১-এর আগমন। শুরু হলো ইসলামের নাম দিয়ে গণহত্যা। সেই সময়ের কয়েকটি ইসলামপন্থী দল স্বাধীনতার বিপক্ষে অবস্থান নেয়ার ফলে সেক্যুলারপন্থীরা মুক্তিযুদ্ধকে ইসলামের প্রশ্নে বুর্জোয়া ফায়সালা হিসেবে উপস্থাপন করতে চেয়েছে। কিন্তু বাস্তবে মুক্তিযুদ্ধের নির্মাণে ও পরিচালনায় ছিল ইসলামের বয়ান।
মুক্তিযুদ্ধকে আল্লাহর পথে জেহাদ বলে হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের মনোবল বাড়িয়েছে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র। মাঠের মুক্তিযোদ্ধাদের প্রেরণা ছিল ইসলাম, শক্তি নিয়েছে ইসলাম থেকেই। আলেম সমাজের একটা বড় অংশ মুক্তিযোদ্ধা সক্রিয় অংশ নিয়েছে এবং জনমত গড়েছে। শুধু বাংলাদেশের আলেম-ই নয়, পাকিস্তানি অনেক আলেম ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে ছিলেন।
অথচ আমাদের অনেকটা জোর করে এই বিশ্বাস করানো হয়েছে ইসলামি চেতনা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতিশব্দ। ইসলাম ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা কখনোই এক ধারায় চলতে পারে না। কারণ, ইসলামী রাষ্ট্র থেকে প্রাপ্ত জুলুম নির্যাতনের ফলেই পাওয়া স্বাধীনতা। কিন্তু কখনোই তা গবেষণা হয়নি কীভাবে ইসলাম এই দেশের জনগোষ্ঠী লড়াই এর প্রেরণা হয়ে উঠল, কীভাবে মানুষের মনন ও গঠন তন্তুতে ইসলাম স্থায়ী আসন নিয়ে তার কারণ কেউ কোনো দিনও তালাশ করেনি; বরং মুক্তিযুদ্ধ ও ইসলামের মধ্যে কৃত্তিম বিরোধ লাগানোতেই সদা তৎপর ছিল বিশেষ এক গোষ্ঠী। ইতিহাসের সেই অব্যক্ত কথা গুলো অনুসন্ধান ও গবেষণার মধ্য দিয়েই পিনাকী ভট্টাচার্য যেই সত্য উন্মোচনের যাত্রা শুরু করলেন তা তো মাত্র শুরু। সামনে হয়তোবা এমন অনেক পিনাকী ভট্টাচার্যের আগমন ঘটবে যারা এই বই টির প্রেরণা নিয়ে এগিয়ে যাবে। আবিষ্কার করবে চেতনার নানান রূপ। ছড়িয়ে দেবে সবখানে মুক্তিযুদ্ধের রঙ।
এছাড়াও যুদ্ধকালীন রাজনীতি নিয়েও চমৎকার ভাষায় চমৎকার কিছু কথা তুলে ধরেছেন লেখক।
কিছু জানবার জন্য বা ব টির বিরোধিতা করবার জন্য হলেও একবার পড়ে দেখার অনুরোধ রইল। বইটিতে আসলেই কোনো ভুল থাকলে তা পড়ে বের করে সবাইকে জানাতে হবে, নাম দেখেই বিরোধিতা করলে কোনো লাভ নেই।
মুক্তিযুদ্ধের বয়ানে ইসলাম
বি:দ্র: মুক্তিযুদ্ধের বয়ানে ইসলাম বইটি free pdf download করিতে চাহিয়া লেখকদের নিরুৎসাহিত করিবেন না
মুহাম্মাদ তানজিম –
মুক্তিযুদ্ধের বয়ানে ইসলাম
মুক্তিযুদ্ধ!
৯ টি মাস এদেশের সাধারণ মানুষের রক্ত,ঘাম, পরিশ্রম, সম্ভ্রম, অর্থ ও ত্যাগের বিনিময়ে যেই মুক্তি, যেই স্বাধীনতা আমরা পেয়েছি তাই তো ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ। আজ আমরা যারা নবীন তারা যুদ্ধ দেখিনি কিন্তু আমাদের ও ৭১ নিয়ে জ্ঞানের অভাব নেই, আমরা ও গবেষণা করি, আমরা আমাদের চেতনা রক্তে ধারণ করি।
কিন্তু যেই চেতনা রক্তে ধারণ করি তা কতটুকু শুদ্ধ? কতটুকু ইতিহাস নির্ভর?
ভেবে দেখেছি কি?
মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আমাদের দেশে একটা বয়ান হাজির আছে। সেই বয়ানে ইসলাম অনুপস্থিত। আমাদের বিশ্বাস করতে বাধ্য করানো হয়েছে ইসলাম মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষিতে অপ্রাসঙ্গিক ছিল। মুক্তিযুদ্ধ শুধুমাত্রই জাতিগত মুক্তির লক্ষ্যেই সম্পাদন হয়েছিল। কিন্তু আরেকটি জিনিস অলিখিত ই থেকে গেলো…..
ইসলামের নামে পাকিস্তান তৈরি হলেও এই পাকিস্তান সরকার এর মুনাফিকি এদেশের ধর্মপ্রাণ মানুষ বুঝে গিয়েছিলো ততদিনে। কিন্তু ধর্মকে ব্যবহার করেই অধর্ম করতে পাকিস্তান সরকার পিছপা হয়নি। বাঙালীদের দমন পীড়ন শুরু হয়ে গেলো সব ক্ষেত্রে এবং অনিবার্য ফলাফল হিসেবে ৭১ এর আগমন। শুরু হলো ইসলামের নাম দিয়ে গণহত্যা। সেই সময়ের কয়েকটি ইসলামপন্থী দল স্বাধীনতার বিপক্ষে অবস্থান নেয়ার ফলশ্রুতিতে সেক্যুলারপন্থীরা মুক্তিযুদ্ধকে ইসলামের প্রশ্নে বুর্জোয়া ফায়সালা হিসেবে উপস্থাপন করতে চেয়েছে। কিন্তু বাস্তবে মুক্তিযুদ্ধের নির্মাণে ও পরিচালনায় ছিলো ইসলামের বয়ান।
মুক্তিযুদ্ধকে আল্লাহর পথে জেহাদ বলে হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা দের মনোবল বাড়িয়েছে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র। মাঠের মুক্তিযোদ্ধাদের প্রেরণা ছিলো ইসলাম, শক্তি নিয়েছে ইসলাম থেকেই। আলেম সমাজের একটা বড় অংশ মুক্তিযোদ্ধা সক্রিয় অংশ নিয়েছে এবং জনমত গড়েছে। শুধু বাংলাদেশের আলেম ই নয়, পাকিস্তানি অনেক আলেম ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে ছিলেন।
অথচ আমাদের অনেকটা জোর করে এই বিশ্বাস করানো হয়েছে ইসলামী চেতনা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতিশব্দ। ইসলাম ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা কখনোই এক ধারায় চলতে পারেনা কারণ ইসলামী রাষ্ট্র থেকে প্রাপ্ত জুলুম নির্যাতনের ফলেই পাওয়া স্বাধীনতা। কিন্তু কখনোই তা গবেষণা হয়নি কিভাবে ইসলাম এই দেশের জনগোষ্ঠী লড়াই এর প্রেরণা হয়ে উঠলো, কিভাবে মানুষের মনন ও গঠন তন্তুতে ইসলাম স্থায়ী আসন নিয়ে তার কারণ কেও কোনো দিনো তালাশ করেনি বরংচ মুক্তিযুদ্ধ ও ইসলামের মধ্যে কৃত্তিম বিরোধ লাগানোতেই সদা তৎপর ছিল বিশেষ এক গোষ্ঠী। ইতিহাসের সেই অব্যক্ত কথা গুলো অনুসন্ধান ও গবেষণার মধ্য দিয়েই পিনাকী ভট্টাচার্য যেই সত্য উন্মোচনের যাত্রা শুরু করলেন তা তো মাত্র শুরু। সামনে হয়তোবা এমন অনেক পিনাকী ভট্টাচার্যের আগমন ঘটবে যারা এই বই টির প্রেরণা নিয়ে এগিয়ে যাবে। আবিষ্কার করবে চেতনার নানান রূপ। ছড়িয়ে দেবে সবখানে মুক্তিযুদ্ধের রঙ।
কিছু কথা : প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদের পর গার্ডিয়ান এর বেস্ট সেলার বই হলো মুক্তিযুদ্ধের বয়ানে ইসলাম।
নাম টা দেখেই বই টি কেনা, একটু ভিন্ন মাত্রার স্বাদ নেয়ার জন্য। ছোটবেলা থেকেই বিভিন্ন লেখকের লেখা পড়ে ও বইপত্র পড়ে মাথায় এটা ঢুকে গেছিলো মুক্তিযুদ্ধে হুজুর রাই রাজাকার ছিলো, দাড়ি টুপি ওয়ালা মোল্লারাই ৭১ র বিরোধিতা কারী। অনেক আগেই সেই ভুল ধারণা ভেঙে গেছে এবং এই বই টি সেই ভুল ধারণার বিপক্ষে এমন কিছু কথা ও দলিল হাজির করেছে আমি নিজেই চমকে গিয়েছি। এতটা আশা করিনি।
কারণ আমি চিনতাম না মুক্তিযুদ্ধের বন্ধু মাওলানা সাইয়্যেদ আসঅাদ মাদানী (র.) কে, চিনতাম না শাইখুল হাদিস মাওলানা আজিজুল হক কে, চিনতাম না হাফেজ মাওলানা আতাউল্লাহ ইবনে হাফেজ্জী হুজুর কে। বই টি বয়ান আমাকে পরিষ্কার ভাবে চিনিয়ে দিয়েছি কোন উদ্দেশ্য কারা ইসলাম ও মুক্তিযুদ্ধকে পাশাপাশি দাড় করাবার বদলে মুখোমুখি এনে দাড় করিয়েছে। রাজাকার মানেই কারা দাড়ি টুপি পাঞ্জাবি ওয়ালা মানুষ দের চিনায় অথচ একটি দেশে যখন সংঘাত বা গৃহ যুদ্ধ লাগে কিছু মানুষ ভয়ে, কিছু মানুষ টাকার লোভে যুদ্ধকারী দের সাথে থাকেই। রাজাকার বলতে যেই দেশদ্রোহী চিত্র ভেসে ওঠে বই টি দলিল দিয়ে সম্পুর্ণ ভিন্ন সুরে কথা বলছে।
এছাড়াও যুদ্ধকালীন রাজনীতি নিয়েও চমৎকার ভাষায় চমৎকার কিছু কথা তুলে ধরেছেন লেখক।
কিছু জানবার জন্য বা বই টির বিরোধিতা করবার জন্য হলেও একবার পড়ে দেখার মত বই এটি। আসলেই কোনো ভুল থাকলে তা পড়ে বের করে সবাইকে জানাতে হবে, নাম দেখেই যদি বিরোধিতা করলে কোনো লাভ নেই।।