বাইতুল্লাহর মুসাফির
[ বাইতুল্লাহর মুসাফির করি বইটির বিস্তুারিত বিবরন শিঘ্রই হালনাগাদ করা হবে ]বাইতুল্লাহর মুসাফির , দারুল কলম এর ইসলামি বই টি পেতে ইসলামী বইঘর.কম এ অনলাইন অর্ডার করুন এখনই।
বাইতুল্লাহর মুসাফির করি বইটি অর্ডার যেভাবে করবেন
১। আপনি ফোন অথবা অনলাইন এর মাধ্যমে অর্ডার করার পর ইসলামিক বইঘর ডট কম আপনার সাথে যোগাযোগ করবে এবং আপনার বিলি ঠিকানা নিশ্চিত করবে ।
২। ইসলামিক বইঘর এখন ঢাকা ও এর আশেপাশে ক্যাশ অন ডেলিভারী ও কুরিয়ার সার্ভিস এর মাধ্যমে বই পাঠাচ্ছে । এবং ঢাকার বাইরে কুরিয়ার সার্ভিস এর মাধ্যমে বই পাঠাচ্ছে ।
৩। বইয়ের মুল্য bKash, ডাচ বাংলা মোবাইল বা ক্যাশ অন ডেলিভারী এর মাধ্যমে প্রদান করা যাবে । বাংলাদেশের যে কোনো প্রান্তে ৪০ টাকায় বই পৌছে দেয়া হবে ।
যে কোন ইসলামী বই পেতে ইসলামিক বইঘর.কম এর সাথেই থাকুন
বি:দ্র: বাইতুল্লাহর মুসাফির বইটি free pdf download করিতে চাহিয়া লেখকদের নিরুৎসাহিত করিবেন না
Muhibbullah bin Atik –
বই: বাইতুল্লাহর মুসাফির।
লেখক: আবু তাহের মিছবাহ।(আদীব হুজুর)
বইটি শুরু করার আগে ভেবেছিলাম যে এত্ত বড় একটা বই কিভাবে শেষ করবো?! কিন্ত লেখক যেহেতু আদীব হুজুর তাই অন্যরকম একটা বিশ্বাস ছিলো যে বইটা অবশ্যই সুখপাঠ্য হবে। কিন্ত বিশ্বাস করুন,বইটা যখন শেষ হয়ে গেলো তখন মনে হচ্ছিলো ধুর এত্ত তারাতারি শেষ হইলো কেন? আর একশত পৃষ্ঠা বেশি হইলে কি এমন ক্ষতি হইতো!! মনে হচ্ছিলো আমি বই পড়ছি না,বরং বই নিজেই আমাকে পড়তে বাধ্য করছে। বইটা শুরু করার পর থেকে শেষ পর্যন্ত মনে হচ্ছিলো আমি অন্য কোনো মানুষ। ভিন্ন কোনো জগতে বাস করছি। কলমের কিছু রেখা যে মানুষকে কতটা শিহরিত ও আন্দোলিত করতে পারে তা এটা পড়লেই বুঝতে পারবেন। মনেই হচ্ছিলো না যে আমি কোনো বই পড়ছি। সব কিছু আমার কাছে কেমন যেন জীবন্ত ও বাস্তব প্রতিচ্ছবি মনে হচ্ছিলো। আর জীবন্ত মনে হবে না কেন? এটা যে শুধু একটা কলমের লেখা নয়,এটাতো একটা জীবন্ত কলবের লেখা! কলব যখন কলমের অনুসারি হয় তখন তার লেখা হয় অসার,কিন্ত কলম যখন কলবের অনুসারি হয় তখন তার লেখাও হয় জীবন্ত। মনেই হচ্ছিলো না যে আমি একটা লেখা পড়ছি! বরং মনে হচ্ছিলো যে আমি স্বয়ং যেন লেখকের সফর সঙ্গি। সব কিছু যেন আমার চোখের সামনেই ঘটছে আর আমি তা দেখতে পাচ্ছি!! ঐ তো আমার সামনেই দাড়িয়ে আছে পাকিস্তানের অজপারা গাঁয়ের সেই বুড়ি মা,যে কিনা হতদরিদ্র হয়েও বাইতুল্লাহ যিয়ারতের স্বপ্ন দেখে! এবং চোখের উষ্ণ জলে বাইতুল্লার মুসাফিরকে বরন করেছিলো!! আমি দেখতে পাচ্ছিলাম সেই অবুঝ বালকটিকেও যার অবুঝ মনের ধারনা ছিলো আল্লাহও তার মত চকলেট পছন্দ করে তাই সে লুকিয়ে আল্লাহ মিয়াঁকে দু’টি চকলেট দিয়েছিলো। আমিতো আবুধাবির সুস্বাদু সব দস্তরখানেও উপস্থিত ছিলাম! নয়ত আমার জিভেও তার স্বাদ লাগছিলো কেন? আমিতো চির লালিত স্বপ্নের বাইতুল্লাহতেও হাজির হয়েছিলাম! নয়তো আমার সর্বসত্তা জুরে অদ্ভুত এক শিহরন জাগছিলো কেন? আমিতো চির পবিত্র মাতাফেও লাব্বাইক বলেছিলাম! নয়তো এমন পুলকিত হচ্ছিলো কেন হ্নদয়? আমিতো মুলতাযামে বুক লাগিয়ে কান্নারত লেখকের সঙ্গেও ছিলাম! তাইতো আমার চোখ থেকেও তখন অশ্রু ঝরছিলো। আমি যেন স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছিলাম আরাফার সেই পবিত্র ভুমি যেখানে উত্তপ্ত বালুর উপর সিজদায় লুটিয়ে পড়েছিলেন হাফেজ্জী হুজুর(র:)। মুজদালিফার উন্মুক্ত আকাশের নিচে তারা ঝিলমিল সেই রাতে তো আমিও ছিলাম তার সঙ্গে! তাইতো তখনো রোমাঞ্চিত হচ্ছিলো আমার অন্তর। বইয়ের ভাষা এতটাই জীবন্ত যে মক্কা- মদিনা,আরাফা -মুজদালিফা ও মিনা-জামারা সব স্থানে আমিও চলে যাচ্ছিলাম লেখকের কলমের কালিতে ভেসে! হজ্বতো অনেকেই করে,কিন্তু এই বই আপনাকে দেখাবে আশেকে রাসুল ও আল্লাহর প্রেমিক বান্দাদের হজ্ব কেমন হয়। শিখাবে কিভাবে প্রেম ও সংযমের মাঝে অবস্থান করতে হয়। এই বই আপনাকে দেখাবে রওজায় দারিয়ে একজন আশেকে রাসুলের সালাম নিবেদন কেমন হয়। আপনাকে উপলব্ধি করাবে বিদায়ি তাওয়াফে একজন সাচ্চা হাজীর দিলের অবস্থা কেমন বেকারার ও বেচাইন হয়। হেজাযের ভুমি ছেড়ে আসতে কতটা কষ্ট অনুভূত হয়।
হজ্ব শেষে হাফেজ্জী হুজুর(র:) ইরাক সফরে গিয়েছিলেন ইরান-ইরাক যুদ্ধ বন্ধ ও শান্তি আলোচনার জন্য। লেখকও ছিলেন সেই সফর সঙ্গি হিসেবে। কেমন ছিলো হাফেজ্জী হুজুর ও সাদ্দাম হোসেনের সেই আলোচনা?কি ছিলো তার ফলাফল? কেমন ছিলো বাংলাদেশের ইসলামি খিলাফাত ও তওবার রাজনীতি এবং কেমন ছিলো সাদ্দাম হোসেনের রাজনীতি? এই সবের উত্তর জানতে হলে বইটি আপনাকে পড়তেই হবে। বইটিতে ইরাক ও বাগদাদের সৌন্দর্য ও তৎকালিন ইরাকের সামাজিক অবস্থা এমন বাস্তব ও জীবন্ত করে ফুটিয়ে তুলেছেন যে আপনার মনে হবে আপনিও তার সফর সঙ্গি ছিলেন। কিভাবে এত অল্প সময়ে একজন ভিনদেশী মানুষের সাথেও তৈরি হয়ে যায় এমন এক আত্মার বন্ধন যাকে ছেড়ে আসতে বুকের পাজর ভেঙ্গে যায়। অনেক বছর পর শৈশবের কোনো বন্ধুর সাথে দেখা হলে কিভাবে হারিয়ে জেতে হয়! ভিনদেশী মুহসিনের সহজ সরল বাবা-মা, তার গ্রামের বাড়ি ও ইরাকের খেজুর বৃক্ষের ছায়াঘেরা ও নয়নাভিরাম গ্রামীন পরিবেশ আপনাকে মুগ্ধ হতে বাধ্য করবে।ঐতো একটু দুরেই দাড়িয়ে আছে মাত্র অল্প কিছুদিনের পরিচয়ে আপন হয়ে যাওয়া মুহাম্মাদ। যে শুধু লেখককেই নয়,আপনাকেও ঘুড়িয়ে দেখাবে বাগদাদের অলি-গলি ও প্রাচীন জনপদ! যার দজলা নদির পাড়ে সবুজ ছায়াঘেরা দ্বিতল বাড়ি ও তার পরিবার আপনাকে শুধু মগ্ধই করবে না স্বপ্নও দেখাবে! লেখক এবং তার বন্ধু মুহাম্মাদের সাথে আপনিও পাড়ি দিবেন বিখ্যাত,প্রাচীন দজলা নদী। ছুটন্ত স্পীড বোডে তাদের সাথে আপনিও ভেসে বেড়াবেন দজলার বুকে। কল্পনার ক্যানভাসে দেখতে পাবেন অতীত শাহজাদা-শাহজাদীদের বিনোদন কেন্দ্র সেই দজলা নদীর সূর্যাস্তের অনন্য অনুপম সৌন্দর্য! সন্ধার পরে আলো ঝলমলে দজলার রুপ, এবং দজলার বুকে ছুটন্ত স্পীড বোডে ভেসে বেড়ানোকে আপনার মনে হবে এক স্বর্গীয় পরিবেশ!! এইতো সেই হতভাগা ফোরাত যে নিজেই কারবালার মর্মান্তিক ও হ্নিদয়বদারক স্বাক্ষী হয়ে বেচে আছে শত-সহস্র বছর ধরে। আপনিও নেমে যাবেন ফোরাতের হাটু পানিতে এবং সেখানেও ঝরবে আপনার অশ্রু এবং তা মিশে যাবে ফোরাতের অশ্রুধারার সাথে।
লেখকের ইরাক সফর এবং এর রুপ-সৌন্দর্য, ইতিহাস-ঐতিহ্য ও ঘটন-অঘটনের স্পষ্ট বর্ননা হচ্ছে এই বইয়ের অন্যতম সংযোজন। যা বইয়ের শেষের একশত পৃষ্ঠা জুড়ে পৃথক ভাবে আলোচনা করা হয়েছে।যা আপনাকে প্রতি মুহুর্তে শিহরিত,আন্দোলিত,পুলকিত ও রোমাঞ্চিত করবে। এই বইয়ে আপনি তৎকালিন পাকিস্তান,আরব আমিরাত,সৌদি আরব এবং ইরাকের সামাজিক,অর্থনৈতিক,রাজনৈতিক ও গ্রামীন জীবন সম্পর্কে এমন সব তথ্য জানতে পারবেন যা আপনার অজানা। কেমন ছিলেন হাফেজ্জী হুজুর(র:)? কেমন ছিলো তার জীবন? কেমন ছিলো সৌদি আরবের প্রখ্যাত গ্রান্ড মুফতি বিন বায(র:) এর জীবন? কেমন ছিলো স্বৈরাচার খ্যাত সাদ্দাম হোসেনের ব্যাক্তিগত ও পারিবারিক জীবন? এরকম আরো অনেক তথ্য জানতে আপনাকে বইটি পড়তে হবে। এই বইয়ে শিক্ষা-দিক্ষা,তথ্য ও তত্ত্বের যে সমন্বয় সাধিত হয়েছে তা কলমের ভাষায় প্রকাশ করা অসম্ভব।
সাব্বির আহমেদ –
আমার পড়া শ্রেষ্ঠ বই