আমার জীবনে আল ফাতিহা (তাফসির আল-শারাওয়ী)
যেখানে সমস্ত আইন-কানুন স্থির ও নিশ্চল হয়ে যায়ঃ আমরা আল্লাহর নামে শুরু করবো কেন? মাল্টি ডাইমেনশনাল যুগোপযোগী আলোচনা ও আধুনিক মননের চিকিৎস।
বিসমিল্লাহ – সংক্রান্ত বর্ণনা এটি। অথচ এখানে দেখবেন কতটা মাল্টি ডাইমেনশনাল আলোচনা রয়েছে যুগোপযুগী ও আধুনিকতার প্রেক্ষাপটে। দেখবেন কীভাবেঃ
(১) আধ্যাত্বিকতা ফুটে উঠেছে, আল্লাহর উপর চূড়ান্ত তাওয়াক্কুল প্রকাশিত হয়েছে।
(২) বৈজ্ঞানিক ধব্জাদারীদের এমনি এমনি পৃথিবী হয় উঠার কার্যকারণ থিওরিকেও কোনো এক জায়গায় নিশ্চল ও নিষ্ক্রিয় হয়ে যায় তা দেখানো হয়েছে, আমাদেরই চোখের সম্মুখের উদাহরণ দিয়ে।
(৩) আবার দুনিয়ার পাপ-অপরাধ, দুর্নীতি, বিশৃঙ্খলার ব্যাপারেও নির্দেশিত হয়েছে যা আধুনিক জমানার পৃথিবীব্যাপী সমস্যা।
(৪) রয়েছে আল্লাহর অত্যন্ত জরুরী একটি পরিচয় – আর-রাহমান ও আর-রাহীমের বর্ণনা, আমাদের প্রেক্ষাপটে আল্লাহর ভূমিকা, আমাদের জন্য আল্লাহর দয়া-রহমত, আমাদের বেঁচে থাকার চূড়ান্ত ভরসা।
বিসমিল্লাহ – এর বর্ণনার একটি অংশমাত্র – এতে রয়েছে আল্লাহর সাথ চূড়ান্ত আধ্যাত্বিকতার বিষয়, বৈজ্ঞানিক ও দার্শনিক অপব্যাখ্যার সমস্যার সমাধান যেখানে যুবক-যুবতীরা সমস্যায় ভোগে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলে-মেয়েরা আল্লাহর দ্বীন ছেড়ে চলে যায়। রয়েছে দুনিয়ার অশান্তির পথের পথিকদের ধরার পলিসি। এজন্যই তাফসিরটি অনন্য। আধ্যাত্বিকতা, বুদ্ধিবৃত্তিক উতকর্ষ, জীবনঘনিষ্ঠতা আর যুগোপযোগিতার অনন্য এক মিশেল।
আল-কুরআনের তাফসির ও সীরাহ – আধুনিক হওয়া জরূরী কেন?
ইসলাম সর্বাধুনিক – কথাটা মুখের। যারা এই কথা বলে তাদেরকেও যদি আধুনিক জমানার কোনো সমস্যাকে সিস্টেম্যাটিকভাবে সমাধা করতে দেন তবে আপনার মুখের ওপর সমাধা দিয়ে দিবে – ইসলাম সব সমস্যার সমাধান। তাইলে তারা বিশ্বকে লিড দিতে পারছে না কেন এই প্রশ্ন যদি ফের করেন তবে আবার হাজারটা সমস্যার কথা বলবে! পশ্চিমাদের দোষাবে!! নিজেদের যেন কোনো দোষ নেই! জ্ঞানের চরম দৈন্যদশা নেই!
বাংলাভাষায় তাফসিরের ক্ষেত্রে আধুনিক কাজ নেই, সীরাহর ক্ষেত্রে মৌলিক ও যুগোপযোগী কাজের খবর নেই (কিছু ভালো সীরাহ অনূদিত হয়েছে অবশ্যই), জ্ঞানের ক্ষেত্রে রিসার্সমূলক ইজতিহাদি চিন্তার কোনো ধারণাই নেই – এরাই আবার অন্যের দোষ ধরে মাথাটাই চাপড়াবে কেবল।
সাহাবা ও সালহে সালেহীনরা ইসলাম শিখতো ও তাদের বাচ্চাদের শেখাতো আল-কুরআন ও সীরাহ দিয়ে। আর আমরা শিখি নিজেদের দলীয় কিতাবাদি ও মানহায দিয়ে। ফলে ঝগড়া তো লেগেই থাকে। মৌলিক জায়গায় হাত না দিয়ে ঝগড়ার জায়গায় লম্বা হাত বিদ্যমান। ফলে বিশ্বকে লিড দেওয়া তো দূরের কথা, নিজেদের মাঝেই লেগে আছে ভেজালের আঞ্জাম।
তাফসীর ও সীরাহর ক্ষেত্রে আধুনিক কাজ না হলে – এই দুটি জায়গা থেকে নবতর পরিবর্তনের সাথে সাথে যদি যুগোপযোগী আলোচনা ও সমাধা না আনতে পারেন তবে সেই জাতির যোগ্যতার অভাব আছে, চরম অভাব। এদেরকে আল্লাহ ক্ষমতা দিবেন এইটা কীভাবে ভাবলেন? যোগ্যতাহীনদের ক্ষমতা দেওয়া তো আমানতের খেয়ানত।
সীরাহর ক্ষেত্রে বাংলাভাষায় আধুনিক কাজ সম্প্রতি হচ্ছে, অনূদিত আকারে। সেটাও অনেক ভালো কাজ নিঃসন্দেহে। ফিকহুস সীরাহর ট্রেন্ড। কিন্তু আল-কুরআনের ক্ষেত্রে এই জিনিসটি এখন পর্যন্ত অনূদিত হয়নি – যুগোপযোগিতার ক্ষেত্রে। যদিও আধুনিক তাফসির অনূদিত হয়েছে (তাদাব্বুরে কুরআন, ফি যিলালিল কুরআন, তাফহিমুল কুরআন) কিন্তু যুগোপযোগিতার পর্যায়ে সেগুলোতে কমতি রয়েছে।
প্রচূর পরিমাণ ছেলে-মেয়ে কুফুরি ও সেক্যুলারিজমের দিকে ঝুকছে। কেন? তাদের ফেরানো যাচ্ছে না কেন? কারণ আপনার আধুনিক ব্যাখ্যা উপস্থিত নাই। ডাক্তার এসরার আহমাদ সূরা নূরের তাফসির করে আমেরিকার বিশ্ববিদযালয়গুলোর প্রফেসরদেরকে বোঝাতেন রাসেল, নিতসের মতো দার্শনিকদের দর্শনের গলদ কোথায়!
সেরূপ আধুনিক চিন্তাভাবনা না থাকলে, আপনি যুগোপযোগী চিন্তাভাবনা না আনলে বিশ্বকে লিড দেওয়া তো দূরে থাক, নিজের ঘরের ভাই-বোন ও সন্তানদেরও দর্শনসমস্যা, বিজ্ঞানসমস্যা, ভোগবাদি সেক্যুলারিজমের সমস্যাকেই তো মিটাতে পারবেন না – দিল্লী তো বহুত দূর।
তুরস্কের সাবেক প্রেজিডেন্ট আহমাদ দাউতগুলের কথা জানেন। তার একটা পিএইচডি থিসিস তার দেশের পররাষ্ট্র পলিসির ভিত্তি! বর্তমান এরদোয়ানের উপদেষ্টা ইব্রাহীম কালিন – তার দেশের সন্তানদের দর্শন সমস্যায় ফেলবে তো দূরে থাক, বরং তিনি মুসলিম দার্শনিকদের দর্শনের উচ্চতা তুলে ধরে কীভাবে বিশ্বকে লিড দিতে হয় সেগুলো শেখায়। এই যুগোপযোগিতা ও জীবনঘনিষ্ঠতা যদি ইসলামের মৌলিক রিসোর্স – আল-কুরআন ও সীরাহ (প্রতিটি হাদীস সীরাহর অংশ) এ না আনতে পারেন তবে এই মুসলিমদের সমস্যা জারিই থাকবে।
ইসলাম যদি আমার সমস্যার সমাধান না দেয়, আল-কুরআন যদি আমার কথা না বলে, আমার সমাজের যুগের দর্শন ও বিজ্ঞান সমস্যা থেকে সন্তান-ভাই-বোনদের না রক্ষা করতে পারে তবে এই সাড়ে চৌদ্দশত বছর আগের জিনিস এই বিশ্বায়নের আধুনিক যুগের মানুষজন গ্রহণ করবে কেন?
এসকল দিক বিবেচনা করেই বাংলাভাষায় প্রথম অনূদিত হচ্ছে যুগোপযোগী, জীবনঘনিষ্ঠ ও আধুনিক তাফসির – তাফসির আল-শারাওয়ী। দর্শন, বিজ্ঞান, সেক্যুলার, ভোগবাদিতাসমস্যাসহ রয়েছে আধ্যাত্বিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক জ্ঞানের অপূর্ব চাক্ষুস সমন্বয়। প্রজ্ঞার আলোকে ইমাম আল-শারাওয়ী রাহিমাহুল্লাহ তুলে এনেছেন আমাদের রুহানি পুষ্টি ও যুগীয় চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার পলিসি।
বি:দ্র: আমার জীবনে আল ফাতিহা (তাফসির আল-শারাওয়ী) বইটি free pdf download করিতে চাহিয়া লেখকদের নিরুৎসাহিত করিবেন না
Reviews
There are no reviews yet.