আল্লাহ আপনাকে দেখছেন
আল্লাহ তায়ালা এই সুজলা পৃথিবীতে আমাদেরকে প্রেরণ করেছেন কেবল তার মনোহরী রূপ-নিসর্গে মুগ্ধ হবার জন্য নয়। ভোরের শ্যামল প্রকৃতি, বিকেলের বাঁকা রংধনু, সন্ধ্যার আলো-আঁধারির মায়া, রাতের নির্মল চাঁদ, মেঘ জোছনার ডুব-সাঁতারে মত্ত থাকা প্রভুপ্রদত্ত এ জীবনের মাকসাদ নয়। শৈশবের আনন্দ, কৈশোরের বালখিল্যতা, তারুণ্যের অফুরন্ত উচ্ছ্বাস, যৌবনের জীবন ও জৈবিক ব্যস্ততা আর বার্ধক্যের অবসর যাপনের ভেতর জীবনকে ফুরিয়ে দিতে মুমিনের জন্ম হয়নি। একটি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য-উদ্দেশ্য দিয়ে আল্লাহ প্রেরণ করেছেন প্রতিটি মানুষকে।
জন্ম ও জীবনের প্রতি রয়েছে অপরিসীম কর্তব্য; যা আদায় করতে হবে নিষ্ঠার সাথে। পার্থিব পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। সাফল্যমণ্ডিত করতে হবে জীবনের ছোট্ট সময়কে। মুমিনের সাফল্য কোথায়? তা আল্লাহ স্বয়ং পবিত্র কুরআনে বলে দিয়েছেন। কতো স্পষ্ট ও সুন্দর আল্লাহর কথা!
فَمَن زُحْزِحَ عَنِ النَّارِ وَأُدْخِلَ الْجَنَّةَ فَقَدْ فَازَ ۗ وَمَا الْحَيَاةُ الدُّنْيَا إِلَّا مَتَاعُ الْغُرُورِ .
‘যাকে জাহান্নাম থেকে দূরে রাখা হবে এবং জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে সেই সফলকাম। পার্থিব জীবন ছলনাময় ভোগ ব্যতীত কিছুই নয়।’ [সুরা আলে ইমরান ১৮৫] পবিত্র কুরআনের এই আয়াতে আল্লাহ তায়ালা সাফল্য ও সফলতার চূড়ান্ত ঘোষণা করেছেন। দুনিয়াতে আগমনকারী প্রতিটি মানুষ তখনই নিজেকে সফল বলে দাবি করতে পারবে যখন সে জাহান্নাম থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে জান্নাতের অধিবাসী করতে পারবে। মুমিনের যাপিত জীবন এই সরল অথচ কঠিন পথ বেয়েই এগিয়ে যাবে।
সে পথে চলতে গিয়ে কখনো বিচ্যুত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। নির্জন অরণ্যের পথে পথে যেমন দুর্ধর্ষ ডাকুরা ওত পেতে বসে থাকে, তেমনি মুমিনের গন্তব্য পথে সমূহ প্রস্তুতি নিয়ে বসে আছে মুমিনের শত্রু অভিশপ্ত শয়তান। তার হাতে ডাকুর মতো ধারালো ছুড়ি নেই; তবে আছে নীল নীল ছলনা। ধোঁকার সজ্জিত সামগ্রী নিয়ে সে বসে আছে। শয়তান দুনিয়ার বিনিময়ে মুমিনের আখেরাত কিনে নিতে চাইবে। দুনিয়ার চাকচিক্য, ধন-সম্পদ, লোভ-লালসা, অহংকার, মিথ্যা ও প্রতারণার মাধ্যমে মুমিনকে সরল-সঠিক ও শাশ্বত পথ থেকে বিচ্যুত করে ভুল পথে পরিচালিত করবে। আল্লাহ তায়ালা মুমিনকে সফলতার পরিচয় দেওয়ার ঠিক পরই অধিকতর সতর্ক করে বলেছেন, ‘পার্থিব জীবন ছলনাময় ভোগ ব্যতীত কিছুই নয়।’ অভিশপ্ত শয়তানের শত ধোঁকা ও প্রবঞ্চনা যেন মুমিনকে বিচ্যুত করতে না পারে; তাই অসীম দয়ালু আল্লাহর এই সতর্কতা।
আল্লাহ আপনাকে দেখছেন বক্ষ্যমাণ গ্রন্থটি একজন মুমিনকে সে চিরকালীন সফলতার পথনির্দেশ করবে। শয়তানের লাল নীল ধোঁকা ও প্রবঞ্চনা থেকে সতর্ক করবে। হৃদয়ে এঁকে দিবে আল্লাহর পরিচয়। উদ্বুদ্ধ করবে হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নতের অনুসরণে। দুনিয়ার মোহ থেকে দৃষ্টি সরিয়ে শাশ্বত আখেরাতের প্রতি ভালোবাসা সঞ্চার করবে। দুষ্ট ও অসৎ লোকদেরকে সংস্পর্শ থেকে টেনে পুণ্যবান ও আল্লাহর প্রিয় বান্দাদের মজলিসে নিয়ে যাবে। কল্যাণ ও অকল্যাণের পার্থক্য টেনে দিবে। মমতার সুরে বলে দিবে কোনটি সুন্দর আর কোনটি কুৎসিত। গ্রন্থটির মূল প্রতিপাদ্য দু’টি। এক, আল্লাহ বান্দাকে এবং বান্দা আল্লাহকে ভালোবাসার বিভিন্ন প্রমাণ উপস্থাপন করে স্রষ্টা ও সৃষ্টির মাঝে সুদৃঢ় বন্ধন তৈরি করার প্রয়াস। দুই, দীর্ঘ বর্ণনা এবং আল্লাহর পবিত্র নাম ও গুণাবলির আলোচনা করে বান্দার অন্তরে বিশেষ এ অনুভূতি জাগ্রত করা যে, আল্লাহ তাকে দেখছেন। ব্যক্তিগঠনের এ শক্তিশালী উপকরণ হৃদয়গ্রাহী ব্যঞ্জনায় বর্ণনা করেছেন আরবের প্রজ্ঞাবান শাইখ খালিদ আর রশিদ।
বি:দ্র: আল্লাহ আপনাকে দেখছেন বইটি free pdf download করিতে চাহিয়া লেখকদের নিরুৎসাহিত করিবেন না
Rajjak hosen Gazi –
অসাধারণ একটি বক্তব্য আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে সঠিক পথ ধরে চলার তৌফিক দান করুন আমিন