সুলতান আলপ আরসালান
সাহসী সিংহ সুলতান আলপ আরসালান। আব্বাসি খেলাফত যখন ধুঁকে ধুঁকে মরছিল, ঠিক সেসময় ধূমকেতুর মতো উত্থান ঘটা সেলজুক সালতানাতের সুলতান হিসেবে আনুগত্য প্রকাশ করেন কেন্দ্রীয় খেলাফতের প্রতি। যেখানে চাইলেই নিজেকে ঘোষণা করতে পারতেন স্বতন্ত্র আমির হিসেবে, সেখানে কেন্দ্রীয় খেলাফতের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে ইসলামের ঝাণ্ডা হাতে এগিয়ে যান যুদ্ধের ময়দানে।
সুলতান আলপ আরসালানকে বলা যায় পঞ্চম শতাব্দীর ইসলামি খেলাফতের ত্রাণকর্তা। খেলাফতকে তখন ঘিরে ধরেছে শিয়া, ক্রুসেডারসহ ক্ষমতালিপ্সু আমিরের দল। ঠিক সেসময় সুলতান প্রবল বিক্রমে ক্রুসেডার ও বিরুদ্ধশক্তিগুলোকে পরাজিত করেছেন যুদ্ধের ময়দানে। শক্তিশালী করেছেন খলিফার হাতকে। সুলতান আলপ আরসালানের সবচেয়ে বড় কীর্তি ধরা হয় মানজিকার্টের যুদ্ধকে; ইতিহাস যার নাম দিয়েছে দ্বিতীয় ইয়ারমুক। ক্রুসেডারদের বিরুদ্ধে অপ্রস্তুত অবস্থায় মাত্র গুটিকয়েক সৈন্য নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন জিহাদের ময়দানে। সুলতানের রাজনৈতিক ও সামাজিক কাঠামোর শ্রেষ্ঠত্ব বোঝার জন্য এটুকু জানাই যথেষ্ট যে— তাঁর প্রধান উজির ছিলেন নিযামুল মুলক; যিনি এক বিপ্লব ঘটিয়েছেন শিক্ষাব্যবস্থার ইতিহাসে।
বি:দ্র: সুলতান আলপ আরসালান বইটি free pdf download করিতে চাহিয়া লেখকদের নিরুৎসাহিত করিবেন না
Md Juwel Rana –
◻️ রিভিউ
“ঐতিহাসিক মানযিকার্ট যুদ্ধে ক্রুসেডারদের বিরুদ্ধে অপ্রস্তুত অবস্থায় মাত্র অল্প সংখ্যক সৈন্য নিয়ে বাইজেন্টাইন রোমানোসের বিরুদ্ধে জিহাদের ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং তুমুল লড়াই করে সুলতান বিজয়ী হন। সুলতান যুদ্ধের আগে আল্লাহর কাছে প্রান খুলে দোয়া করেন৷ ঐ যুদ্ধে সুলতানের প্রতি আল্লাহর দয়া, রহমত ছিলো বলেই সুলতানের মনোবল শক্তি ছিলো পাহাড় সমান। ”
▪️ফ্ল্যাপ থেকে:
হিজরি ৫ম শতাব্দীর শুরুর দিকে মুসলিম বিশ্বের সার্বিক পরিস্থিতি ছিল খুবই নাজুক। সেসময় মুসলমানদের শক্তিশালী কেন্দ্রীয় কোনো নেতৃত্ব ছিল না। মুসলিম বিশ্ব তখন একটি ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছিল। আব্বাসি খলিফার পদটি টিকে ছিল কেবল ঐতিহ্যের স্মারক হিসেবে। কার্যত তিনি ছিলেন অসহায়। সাম্রাজ্যের বিভিন্ন পদে ছড়িয়ে থাকা তুর্কি গোলামরা মূলত নিয়ন্ত্রণ করছিল সবকিছু।
অপরদিকে বাগদাদের বাইরে বেশিরভাগ অঞ্চলে প্রতিষ্ঠিত হয় স্বাধীন সালতানাত। একটি কেন্দ্রীয় শাসনব্যবস্থার অধীনে একত্রিত হওয়ার বদলে তারা প্রত্যেকেই চাইতো নিজেকে ক্ষমতার আসনে অধিষ্ঠিত করতে। রাজ্যে ছড়িয়ে পড়ে শিয়াদের প্রভাব। খেলাফতকে তখন ঘিরে ধরেছে শিয়া, ক্রুসেডারসহ ক্ষমতালিপ্সু আমিরের দল। ঠিক সেসময় সুলতান প্রবল বিক্রমে ক্রুসেডার ও বিরুদ্ধশক্তিগুলোকে পরাজিত করেছেন যুদ্ধের ময়দানে।উত্থান ঘটে সেলজুক সালতানাতের, আগমন ঘটে সাহসী সিংহ সুলতান আলপ আরসালানের।
.
.
সুলতান আলপ আরসালান (১০২৯-১০৭২)। তিনি সেলজুক সাম্রাজ্যের তৃতীয় সুলতান এবং সেলজুকের প্রপৌত্র। তাঁর সামরিক দক্ষতা, বীরত্ব এবং লড়াইয়ে পারদর্শিতার জন্য তিনি আলপ আরসালান উপাধি লাভ করেন। তুর্কি ও তুর্কমেন ভাষায় এর অর্থ “বীর সিংহ”। তাঁর শাসনকালে তিনি আমুদরিয়া থেকে টাইগ্রিস পর্যন্ত পারস্যের একচ্ছত্র সম্রাট হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন।
.
.
১০৭১ সালে, ঐতিহাসিক মানযিকার্ট যুদ্ধে, বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যকে পরাজিত করে, সুলতান আলপ আরসালান ইতিহাসে নাম করে নেন। বর্ণিত আছে, বাইজেন্টাইন সম্রাট রোমানোসকে বন্দি অবস্থায় আলপ আরসালানের সামনে আনা হয়। আলপ আরসালান তার সাথে সদয় আচরণ করেন। যা আজও ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা রয়েছে।
▫️পাঠ অনুভূতি:
বইটি পড়ে আবেগাপ্লুত হয়ে গিয়েছি সুলতানের মৃত্যু সম্পর্কে লেখা অংশটুকু পড়ে৷ সুলতান আলপ আরসালান তাঁর ৪১ বছর হায়াতের জীবনের মধ্যে ইসলামের জন্য এতো কিছু করে গেছেন। আল্লাহ তাঁকে জান্নাত নসিব করুন৷ আমিন ইয়া রাব্ব।
▫️একান্ত মতামত:
বইটির বানান ফন্ট তুলনামূলক বড় ছিলো। বইটির পৃষ্ঠা সংখ্যা এজন্য কিছুটা বাড়ানো গেলো।
▪️সবশেষে:
সুলতান আলপ আরসালান (রহ:) কে নিয়ে একক কোনো বই চোখে পড়েনি। উক্ত বইটি কলেবরে ছোট হলেও সুলতানের বীরত্বের জীবন কাহিনী অল্পসরে আলোচনা করা আছে৷ ইনশাআল্লাহ আশা রাখি ভবিষ্যতে আরো বড়োসরো আকারে সুলতান (রহ:) নিয়ে বই আসবে বাজারে৷
🔸বই: সুলতান আলপ আরসালান
▪️লেখক: ইমরান রাইহান
▫️প্রকাশক: দারুল ওয়াফা
▪️পৃষ্ঠা: ৮০/ মুদ্রিত মূল্য ৮০/-