সালাফদের ইলমী শ্রেষ্ঠত্ব
সালাফদের ইলমী শ্রেষ্ঠত্ব বই হতেঃ
উপকারী ইলম ( عِلْمًا نَافِعًا) দুইটা জিনিসকে নির্দেশ করেঃ
প্রথমঃ আল্লাহর পরিচয়, তাঁর উপযুক্ত সুন্দর নামসমূহ ও উচ্চতর গুণসমূহ এবং চমৎকার কর্মসমূহ। এটি তাঁর বড়ত্ব-মহত্ত্ব, ভয়-প্রতিপত্তি, ভালোবাসা-আকাংখা, তাঁর ওপর ভরসা ও তাঁর সিদ্ধান্তের প্রতি সন্তুষ্ট থাকা এবং বিপদাপদে সবর করাকে আবশ্যক করে।
দ্বিতীয়ঃ আকীদা-বিশ্বাস ও প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য কথাকাজের ক্ষেত্রে তাঁর পছন্দ ও অপছন্দের বিষয়ে অবগত হওয়া। যে এসব বিষয় জানবে তাঁর জন্য আল্লাহর সন্তুষ্টিপূর্ণ কাজে দ্রুত অগ্রসর হওয়া এবং তাঁর অসন্তুষ্টি ও অপছন্দের কাজ থেকে দূরে সরে থাকা জরুরি হয়ে পড়বে। যখন ইলম তার বাহকের জন্য এমন ফলাফল বয়ে আনবে তখন তাকে বলা হবে উপকারী ইলম। আর ইলম যখন উপকারী হবে এবং আল্লাহর বড়ত্ব তার অন্তরে গেঁথে যাবে তখন অন্তর এমনিতেই বিনয়াবনত হবে। প্রতিপত্তি, বড়ত্ব-মহত্ত্ব ও ভয়-ভালোবাসার দরুন আল্লাহর সামনে মাথানত করবে। আর যখন আল্লাহর সামনে অন্তর মাথানত করবে তখন দুনিয়ার সামান্য হালাল জিনিস দ্বারাই সে পরিতৃপ্ত হবে। অল্পে তুষ্টি ও দুনিয়া-বিমুখতা তার অবশ্যই লাভ হবে।
[লেখেছেনঃ Nabil Zawad]
বি:দ্র: সালাফদের ইলমী শ্রেষ্ঠত্ব বইটি free pdf download করিতে চাহিয়া লেখকদের নিরুৎসাহিত করিবেন না

রাসুল (স.) সম্পর্কে ১০০০ প্রশ্ন
ইন দ্য হ্যান্ড অব তালেবান
সোনালী যুগের মুফাসসিরীনে কেরাম
জঙ্গিবাদের উৎস
আউলিয়ায়ে কেরামের সিয়াম সাধনা ( রমজানের ফাজায়েল ও মাসায়েল )
মধ্যপ্রাচ্যে হাফেজ্জী হুজুর
ইসলামের পরিচয়
মিসবাহুল লুগাত (আরবী-বাংলা)
বিশ্বাসের বহুবচন (শাপলা থেকে শাহবাগ)
হাদিকাতুল আফআল
আল্লাহর পরিচয়
তাজা ঈমানের সত্য কাহিনী
কুরআন ও নবীর আদর্শের আলোকে সুখী দাম্পত্য জীবন
বড়দের ছেলেবেলা
ওগো শুনছো
মুনাজাতে মাকবুল
মুহররম ও আশুরার ফযিলত
আল্লাহর পথের ঠিকানা
আল-ফিকহুল আকবার
মাসাদিরুল কুরআন - আরবি-উর্দু-বাংলা
বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (স) জীবন ও বৈশিষ্ট্য
আর রাহীকুল মাখতুম
মিসবাহুল লুগাত (আরবি-বাংলা)
কাদিয়ানীরা অমুসলিম কেন?
মনীষীদের দৃষ্টিতে সময়ের মূল্য
ইসলাম একালের ধর্ম
হযরত আবু বকর (রা.) জীবনকথা
এসো দরখাস্ত লিখি (আরবি, উর্দু, ফার্সি, বাংলা ও ইংরেজি)
আল্লাহকে আপন করে নিন
আলোর ভুবন ফুলেল জীবন
কুরবানীর ইতিবৃত্ত
ইসলামের মৌলিক বিষয়ের উৎপত্তি
মুক্তার চেয়ে দামী (৯-১০ খন্ড)
জীবহত্যা ও ইসলাম
বড়দের বড়গুণ
ঈমান ও বস্তুবাদের সংঘাত
আল মানার
পূর্ণাঙ্গ মাক্সূদুল মু’মিনীন বা মু’মিনের ব্যবহারিক জীবন
আলোর পথে
মরণের আগে ও পরের জীবন
কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে অমুসলিম ও মুসলিম দেশে দীন প্রতিষ্ঠায় মুসলমানদের করণীয়
বাংলা ভাষার বানানরীতি
ফিতনার দিনে নির্জনবাস
এনজিও খ্রীস্টবাদের কবলে বাংলাদেশ
অর্থ-বাণিজ্য শব্দকোষ
কুরআন প্রেমিকদের অমর কাহিনী
ইবাদতের চল্লিশ মূলনীতি
মিলাদ-কিয়াম ও হাযির-নাযির [ বিশ্লেষণ ও পর্যালোচনা ]
মুমিনের সফলতা
কুরআন সুন্নাহর আলোকে ইসলামী আকীদা
গুনাহ পরিত্যাগের পুরস্কার
সহিহভাবে কুরআন শিক্ষা তাজওইদ
হজযাত্রীর সঙ্গী ফাযায়িল মাসায়িল ও আদাব
খোলাসাতুল কুরআন
জান্নাতে যাওয়ার সহজ পথ
জীবন ও কর্ম : উমর ইবনে আব্দুল আযীয রহ.
তাফসীর ফী যিলালিল কোরআন (৮ম খন্ড)
বাংলার শত আলেমের জীবনকথা
কোন পথে ইউরোপের ইসলাম
পাঁচ কন্যা
শিশু কিশোর সিরিজ (১-৭): গল্পে আঁকা ইতিহাস
দৈনন্দিনের সহস্রাধিক সুন্নাত
আমলি জিন্দেগি (ইলম ও আমলের সমন্বয়) 
আরিফ আজাদ –
সালাফদের ইলমী শ্রেষ্ঠত্ব
আজকে পড়ছিলাম ইবন রজব হাম্বল (রহঃ) এর ‘সালাফদের ইলমী শ্রেষ্ঠত্ব’ বইটা। খুব ছোট বই। লেখক, অনুবাদক আর প্রকাশকের কথা বাদ দিলে সর্বসাকুল্যে পঞ্চাশ পৃষ্ঠার মতোন হবে। কিন্তু এই পঞ্চাশ পৃষ্ঠার প্রতিটি লাইন যেন আমার গর্ব, অহঙ্কার, আমার দাম্ভিকতা, অহমিকা সব গুঁড়িয়ে দিচ্ছিলো।
‘জেনে ফেলেছি’, ‘বুঝে ফেলেছি’ ‘শিখে ফেলেছি’ আর ‘আমি যা মানি সেটাই ঠিক’, ‘আমি যেটা বুঝি সেটাই ঠিক’ টাইপের যে ব্যামোগুলো এতোদিন নিজের মধ্যে কাজ করতো, সেগুলোকে যেন মূহুর্তেই ধূলিসাৎ করে দিয়ে গেলো প্রতিটি লাইন।
আমি ভুলতে বসেছিলাম জ্ঞান সমুদ্রে আমি নিতান্তই এক বিন্দু জলের ন্যায়। আমার জানার পরিধি সেই একটি বিন্দুর কয়েক মিলি ভাগের এক ভাগের সমানও না। এই ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র জ্ঞান আমাকে যেরকম অহংকারী করে তুলেছিলো, আমার দাম্ভিকতাকে যে উচ্চাসনে নিয়ে গিয়েছিলো, বইটি আমাকে সেখান থেকে আস্তাকুড়ে নিক্ষেপ করেছে।
বইটিতে ইমাম আবু দাঊদের একটি সুন্দর উক্তি আছে। তিনি বলেছেন,- ‘সাহাবা (রাঃ) দের মধ্যে ইবন আব্বাস একটু বেশিই মন্তব্য করতেন। এর মানে এটা নয় যে ইবন আব্বাস আবু বকর (রাঃ) এবং ওমর ফারুক (রাঃ) দের চেয়ে বেশি জানতেন। বরং আবু বকর এবং ওমর ফারুক (রাঃ)-রাই ইবন আব্বাসের চেয়ে বেশি জ্ঞান রাখতেন। কিন্তু তারা বলতেন কম। চুপ থাকতেন বেশি।
আবার, সাহাবা (রাঃ) দের চেয়ে তাবেয়ীগন বেশি কথা বলতেন। এর মানে এই নয় যে, সাহাবাদের চেয়ে তাবেয়ীগন বেশি জানতেন। সাহাবারা নিঃসন্দেহে বেশি জানতেন, কিন্তু বলতেন কম। আবার, তাবেয়ীগনের চেয়ে তাবে-তাবেয়ীগন বেশি বলতেন। এর মানে এই নয় যে তাবেয়ীগনের চেয়ে তাঁরা বেশি জ্ঞান রাখতেন। বরং তাবেয়ীগনই বেশি জ্ঞান রাখতেন। কিন্তু তাঁরা বলতেন কম। চুপ থাকতেন। অর্থাৎ, জ্ঞানীদের একটা বৈশিষ্ট্য হলো বিতর্ক না করে চুপ থাকা’।
আমাদের সমাজে এখন আমরা যারা তালেবে ইলম (জ্ঞান অন্বেষণকারী) আছি, তাদের মধ্যে এইটা বেশিই কাজ করে। সময় হচ্ছে আল্লাহ তা’লার বিশেষ একটা নিয়ামাহ আমাদের জন্য। প্রতিটা সময় আমাদের মৃত্যুর নিকট থেকে নিকটবর্তী করে। অথচ, এই মহামূল্যবান সময়গুলো আমরা অনলাইনে ব্যয় করি কিভাবে? এক মুসলিম আরেকজন মুসলিমের দোষ-ত্রুটি খুঁজে। লা মাযহাবিরা মাযহাবিদের পেছনে, মাযহাবিরা লা মাযহাবিদের পেছনে। একে-অন্যকে এমনভাবে আর এমন ভাষায় আক্রমণ করে বসি যে, কিছু কিছু ক্ষেত্রে সেটা ভদ্রতা, শিষ্টাচারের লেভেল ক্রস করে চলে যায়। অপেক্ষায় থাকি কার কখন কোন মন্তব্য আমার অপছন্দ হবে আর সেটার স্ক্রিনশট করে জায়গায় জায়গায় পোস্ট দেওয়া এবং এর-ও’র ইনবক্সে দিয়ে বেড়ানো আর বলে বেড়ানো যে- ‘দেখেছেন? এতোদিনে থলের বেড়াল বেরুলো। বলেছিলাম না এই লোক আমাদের মানহাযের না? সে অমুক মতাবলম্বী। অতএব, সে ইসলাম থেকে খারিজ’।
ব্যস! এবার তাঁর বিরুদ্ধে দলবল নিয়ে নেমে পড়া এবং জায়গায় জায়গায় তাকে হেয় করা, হেনস্থা করা।
অথচ এই যে পরনিন্দা, গীবত আর বিদ্বেষ ছড়িয়ে যে সময়গুলো আমরা নষ্ট করি, এই সময়গুলো কতো প্রোডাক্টিভ সাইডে ব্যবহার করা যেতো। কতো কিছু পড়া যেতো, জানা যেতো।
সালাফদের সাথে আমাদের মেজর একটা গ্যাপ এখানেই। উনারা জ্ঞানার্জন করেছেন আমল করার জন্য, আমরা জ্ঞানার্জন করি আমার মতের বিরুদ্ধে থাকা ব্যক্তিকে বিতর্কে হারানোর জন্য। আপসোস!
এই যে নিজের জানার আর বোঝার বড়াই, অহংকার, এইটা আমাদের সময়ের জন্য বিশাল একটা ফিতনা। এই ফিতনার সময়ে আমাদের জ্ঞানার্জন আর সেগুলোর ব্যবহারিক পদ্ধতি কেমন হতে হবে সেটা জানার জন্য ‘সালাফদের ইলমী শ্রেষ্ঠত্ব’ বইটা অবশ্য পাঠ্য একটা বই। আল্লাহ লেখককে কবুল করুন, আ-মী-ন।