মা মা মা এবং বাবা
মা মা মা এবং বাবা বইটির ফ্ল্যাপ থেকেঃ
পিতা-মাতা এবং সন্তানের মধ্যকার সম্পর্কটাই পৃথিবীর সবচেয়ে মধুর এবং সবচেয়ে সুন্দর সম্পর্ক। এই সম্পর্কের কোথাও কোনো খাঁদ নেই। নেই স্বার্থ কিংবা স্বার্পরতার ছোঁয়া। মায়া, মমতা, আদর, যত্ন এবং নিখাঁদ ভালোবাসার এক অদ্ভুত চক্রে আবর্তিত এই সম্পর্কের প্রতিটি মুহূর্ত। আমাদের জন্ম, বেড়ে ওঠা, শৈশব এবং কৈশোরের গল্পে, আমাদের যুবক হয়ে ওঠার চিত্রপটে তারাই থাকেন মূল ভূমিকায়।
অথচ নিয়তির নির্মম পরিহাসে আমাদের জীবনের সেই মহানায়ক আর মহানায়িকা, যারা নিজেদের সবটুকু ঢেলে দিয়ে আমাদের আগলে রাখেন, আমাদের মানুষ করেন, তাদেরকে আমরা আস্তাকুড়ে ছুঁড়ে ফেলি। পরিত্যক্ত জঞ্জালের ন্যায় ভাগাড়ে নিক্ষেপ করি। এমনসব কঠিণপ্রাণ সন্তান, যারা দুনিয়ার লোভ আর মোহে পড়ে বাবা-মা’কে ভুলে যায়, ভুলে যায় তাদের অবদান, ত্যাগ আর তিতিক্ষার গল্প, কেমন হয় তাদের পরিণতি?
অথবা, এমনসব সৌভাগ্যবান সন্তান, যারা সবকিছুর বিনিময়ে বাবা-মা’কে আগলে রাখে, ভালোবাসে, যেভাবে শৈশবে তাদের আগলে রেখেছিল তাদের পিতা-মাতা, কেমন হয় সেসকল সন্তানদের যাপিত জীবনের গল্প? সেরকম একঝুঁড়ি গল্পের সমাহার নিয়ে রচিত মা মা মা এবং বাবা
বি:দ্র: মা মা মা এবং বাবা বইটি free pdf download করিতে চাহিয়া লেখকদের নিরুৎসাহিত করিবেন না

নারী-ফিতনা
সুন্নাহর আলোকে আমাদের নামায
শায়খ নিজামউদ্দিন আউলিয়া (র) জীবন কর্ম
উম্মতের মতবিরোধ ও সরলপথ
মালফূযাতে ফুলপুরী রহ.
মরনের পরে কি হবে
দ্বীনদারি সফল জীবনের চাবিকাঠি
ইসলামের সমাজ দর্শন
আসুন সংশোধন হই
ইসলাম একালের ধর্ম
নতুন ঝড়
দৈনন্দিন জীবনে নবীজির সুন্নাহ
ইবাদতের চল্লিশ মূলনীতি
একটি লাল নোটবুক
ইতিহাসের মৃত্যুঞ্জয়ী মহাবীর শহীদ টিপু সুলতান
স্পেনের রূপসী কন্যা-১ম খন্ড
কিতাবুল অসিয়ত
মুসলিম পরিবারের ছেলেমেয়েরা কেন ইসলাম থেকে দূরে সরে যাচ্ছে
জীবহত্যা ও ইসলাম
বিবেকের জবানবন্দী
তাসাওউফ কি ও কেন?
কবরপূজারি কাফের
প্রচলিত কু প্রথা
রাহে আমল-১
তাওহিদের মর্মকথা
শাহরু রমাদান বিধিবিধান ও আমল
এনজিও খ্রীস্টবাদের কবলে বাংলাদেশ
ক্রোধ ও হিংসা : অনিষ্ট ও প্রতিকার
নামাজে মনোযোগ বাড়ানোর উপায়
অবশেষে মুসলমান হলাম
ধর্মের আসল উদ্দেশ্য কী? 
Yeasin –
মা মা মা এবং বাবা – একজন মায়ের প্রতিক্রিয়া
১.
আট বছরের আনাস। পিঠাপিঠি ছোট দুই ভাই আছে তার। ওদের জন্মের পর থেকেই বেচারাকে আর আগের মত সময় দিতে পারেন না মা। হিফয শুরু করার পর থেকে প্রতিদিন ভোরে উঠে ক্লাসে চলে যেতে হয়। বাসায় ফিরতে ফিরতে বাজে দুপুর আড়াইটা। এরপর মায়ের বকা খেতে খেতে দিনের বাকি অংশ কেটে যায়। সংসারের কাজ, ছোট দুই ভাইয়ের দেখাশোনা, স্কুলের হোমওয়ার্ক করাতে গিয়ে মার সময় হয় না ওর দিকে নজর দেয়ার। দুপুরে সবাই যখন ভাতঘুমে মগ্ন, নিজের হাতে এক গ্লাস শরবত বানিয়ে বইয়ের শেলফ থেকে মোটাসোটা কোন বই নামিয়ে উপুর হয়ে শুয়ে পড়তে থাকে আনাস। বই পড়তে পড়তে শরবতে চুমুক দেয়। এটা এখন ওর নিত্যদিনের রুটিন।
ভাইদের সাথে ঝগড়া হলে মা কেন যেন শুধু ওকেই বকা দেন, ওর দোষটাই দেখেন অথচ ছোটদের আদর করে দেন। আজকাল মায়ের কথা শুনতে ইচ্ছা করে না। যদিও মা ছাড়া আর কেউ ওকে বুঝতে পারে না। স্কুলের কোন ঘটনায় মন খারাপ হলেও মা কিভাবে যেন টের পেয়ে যান। সব কথা মাকে বলে হালকা হওয়া যায়। কিন্তু এখন আর সে সুযোগটাও হয় না।
২.
আমি আনাসের মা। গত কয়েকদিন ধরে ওকে নিয়ে বেশ চিন্তিত ছিলাম। ওর বাবার সাথেও ব্যাপারটা নিয়ে আলোচনা করলাম। দিন দিন কেমন যেন হয়ে যাচ্ছে ছেলেটা। মায়ের অবাধ্য, সলাতে অমনোযোগী, একাকী। স্কুলেও রেজাল্ট খারাপ করছে। ভাইদের সাথে কারণে অকারণে ঝগড়া বেঁধে যাচ্ছে। বকা দিলে রাগ করে ঘরের দরজা বন্ধ করে বসে থাকে।
বই পড়ার খুব নেশা ওর। নতুন বের হওয়া ইসলামি বইগুলো ওর জন্য হাতে নেয়ার সুযোগ হয় না আমার। সেদিন সিয়ান থেকে প্রকাশিত আবু বাকার রাদিয়াল্লাহু আনহুর বইটা দ্বিতীয়বারের মতো পড়া শুরু করল, সেই রাতেই বাবা নতুন কিছু বই নিয়ে বাড়ি ফিরলেন। ওখান থেকে একটা বই ওকে গিফট করলেন তিনি – “মা মা মা এবং বাবা”।
পরদিন স্কুল থেকে ফিরে যথারীতি নতুন বই হাতে শুয়ে পড়ল আনাস। আসরের সলাত পড়ার জন্য ডাকতে গিয়ে দেখি বেঘোরে ঘুমুচ্ছে। পাশে বাবার দেয়া বইটা। পরে শুনলাম, পুরো বই পড়ে শেষ করে ঘুমিয়ে পড়েছিল ও।
সেদিনও ওর পরিবর্তনটা চোখে পড়েনি তেমন। দু’একদিন পর লক্ষ্য করলাম, হঠাৎ করে আমার প্রতি আচার-আচরণে যেন অনেকটাই বদলে গেছে ছেলেটা। আমি সামান্য বিরক্ত হলে বা মন খারাপ হলেই বিচলিত হয়ে পড়ে সে, কাছে এসে জানতে চায় “মা তোমার মন খারাপ? আমি কি তোমাকে কষ্ট দিয়েছি?” এরকম একবার দুইবার না – কয়েকবার হয়েছে।
রাগ হয়ে বকা দিলে অভিমান তো দূরের কথা – জড়িয়ে ধরে মাফ চাইতে থাকে। শুধু তাই না, আমার কোন কথার অবাধ্য হয় না; আমার কাজে সাহায্য করার চেষ্টা করে। গতকাল ইশার সলাতে ইমাম হয়েছে, ওর পেছনে সলাত আদায় করেছি আমি। অথচ আগে হাজার বললেও এই কাজ করতে চাইত না।
মা-ছেলের দূরত্ব ঘুচে গেছে এখন। ওর প্রতি ভালোবাসা বেড়ে গেছে বহুগুন। এখন দোষ করলেও বকা দিতে পারি না। আশা করি ছোট দুইজনও এভাবে বড় ভাইয়ের অনুসরণ করবে।
আলহামদুলিল্লাহ্! ছোট একটা বই, ছোট একটা মানুষকে এভাবে বদলে দিতে পারে তা ছিল কল্পনার বাইরে। ম্যাজিকের মতো কাজ করেছে যেন বইটি। প্রত্যেক ঘরে ঘরে এই বই রাখা উচিৎ, প্রত্যেক সন্তানের এটা পড়া উচিৎ।
আল্লাহ মা মা মা এবং বাবা বইটির সাথে সংশ্লিষ্ট সবাইকে উত্তম বিনিময় দান করুন…আমীন!
_____________
সিহিন্তা শরীফা আপু