কুরআন-সুন্নাহর আলোকে পোশাক, পর্দা ও দেহ-সজ্জা
সংক্ষিপ্ত বর্ণনাঃ
পোশাক মানুষের মৌলিক চাহিদা। লজ্জাস্থান আবৃত রাখা এবং সুন্দর ও পরিপাটি থাকার চাহিদা মানুষের স্বভাবজাত। তদ্রূপ শীত-গ্রীষেমর প্রকোপ ও বাইরের ধুলোবালি থেকে শরীরকে রক্ষার জন্য তা একটি প্রয়োজনীয় আবরণ। তাই পোশাক আল্লাহ তাআলার নেয়ামত। কুরআন মজীদে বলা হয়েছে-
يَا بَنِي آدَمَ قَدْ أَنْزَلْنَا عَلَيْكُمْ لِبَاسًا يُوَارِي سَوْآتِكُمْ وَرِيشًا ۖ وَلِبَاسُ التَّقْوَىٰ ذَٰلِكَ خَيْرٌ ۚ ذَٰلِكَ مِنْ آيَاتِ اللَّهِ لَعَلَّهُمْ يَذَّكَّرُونَ [٧:٢٦] হে আদাম সন্তান! আমি তোমাদেরকে পোষাক-পরিচ্ছদ দিয়েছি তোমাদের লজ্জাস্থান আবৃত করার জন্য এবং শোভা বর্ধনের জন্য। আর তাকওয়ার পোশাক হচ্ছে সর্বোত্তম পোশাক। ওটা আল্লাহর নিদর্শনসমূহের মধ্যে একটি যাতে তারা উপদেশ গ্রহণ করে। সূরা আরাফ : ২৬
স্বভাগতভাবেই মানুষের মাঝে সতর ঢেকে রাখার প্রেরণা রয়েছে। স্বভাব ও রুচির বিকৃতি না ঘটলে এর বিপরীত হয় না। এরপরও শরীয়ত ‘সতর’ ঢাকাকে রুচি ও স্বভাবের উপর ছেড়ে দেয়নি, দ্বীনের অপরিহার্য বিধান বানিয়ে দিয়েছে। কারণ মানুষের স্বাভাবিক রুচি ও শালীনতাবোধকে সংরক্ষণ করার জন্যও সুনির্দিষ্ট নীতি ও নির্দেশনার প্রয়োজন। অন্যথায় বিভিন্নভাবে তা বিনষ্ট হতে পারে। অর্থের লালসা, খ্যাতির মোহ, প্রদর্শন-প্রিয়তা ও নির্বিচার অনুকরণ মানুষের শালীনতাবোধকেও পরিবর্তন করে দেয়। বর্তমান সমাজ এর মর্মান্তিক দৃষ্টান্ত।
পোষাক শুধু বাইরের বিষয় নয়, তা মনের গতিবিধিকেও নিয়ন্ত্রণ করে। কোনো পোষাক মানুষকে অহংকারী করে। কোনো পোষাক বিনয় দান করে। কোনটা উশৃঙ্খল হওয়ার উসকানী দেয় আর কোনটা করে শান্ত সমাহিত। হৃদয় ও আত্মার পবিত্রতা এবং বাহ্যিক আচার-আচরণেও পোষাকের প্রভাব অনস্বীকার্য। এজন্য ইসলামী শরীয়তে লেবাস-পোষাকের কিছু নীতি রয়েছে, যা অনুসরণ করে মানুষ পোষাকের কল্যাণ লাভ করতে পারে এবং পোষাকের অকল্যাণ থেকে রক্ষা পেতে পারে।
পোশাক মানুষের মৌলিক চাহিদা। লজ্জাস্থান আবৃত রাখা এবং সুন্দর ও পরিপাটি থাকার চাহিদা মানুষের স্বভাবজাত। তদ্রূপ শীত-গ্রীষেমর প্রকোপ ও বাইরের ধুলোবালি থেকে শরীরকে রক্ষার জন্য তা একটি প্রয়োজনীয় আবরণ। তাই পোশাক আল্লাহ তাআলার নেয়ামত। কুরআন মজীদে বলা হয়েছে-
يَا بَنِي آدَمَ قَدْ أَنْزَلْنَا عَلَيْكُمْ لِبَاسًا يُوَارِي سَوْآتِكُمْ وَرِيشًا ۖ وَلِبَاسُ التَّقْوَىٰ ذَٰلِكَ خَيْرٌ ۚ ذَٰلِكَ مِنْ آيَاتِ اللَّهِ لَعَلَّهُمْ يَذَّكَّرُونَ [٧:٢٦] হে আদাম সন্তান! আমি তোমাদেরকে পোষাক-পরিচ্ছদ দিয়েছি তোমাদের লজ্জাস্থান আবৃত করার জন্য এবং শোভা বর্ধনের জন্য। আর তাকওয়ার পোশাক হচ্ছে সর্বোত্তম পোশাক। ওটা আল্লাহর নিদর্শনসমূহের মধ্যে একটি যাতে তারা উপদেশ গ্রহণ করে। সূরা আরাফ : ২৬
স্বভাগতভাবেই মানুষের মাঝে সতর ঢেকে রাখার প্রেরণা রয়েছে। স্বভাব ও রুচির বিকৃতি না ঘটলে এর বিপরীত হয় না। এরপরও শরীয়ত ‘সতর’ ঢাকাকে রুচি ও স্বভাবের উপর ছেড়ে দেয়নি, দ্বীনের অপরিহার্য বিধান বানিয়ে দিয়েছে। কারণ মানুষের স্বাভাবিক রুচি ও শালীনতাবোধকে সংরক্ষণ করার জন্যও সুনির্দিষ্ট নীতি ও নির্দেশনার প্রয়োজন। অন্যথায় বিভিন্নভাবে তা বিনষ্ট হতে পারে। অর্থের লালসা, খ্যাতির মোহ, প্রদর্শন-প্রিয়তা ও নির্বিচার অনুকরণ মানুষের শালীনতাবোধকেও পরিবর্তন করে দেয়। বর্তমান সমাজ এর মর্মান্তিক দৃষ্টান্ত।
পোষাক শুধু বাইরের বিষয় নয়, তা মনের গতিবিধিকেও নিয়ন্ত্রণ করে। কোনো পোষাক মানুষকে অহংকারী করে। কোনো পোষাক বিনয় দান করে। কোনটা উশৃঙ্খল হওয়ার উসকানী দেয় আর কোনটা করে শান্ত সমাহিত। হৃদয় ও আত্মার পবিত্রতা এবং বাহ্যিক আচার-আচরণেও পোষাকের প্রভাব অনস্বীকার্য। এজন্য ইসলামী শরীয়তে লেবাস-পোষাকের কিছু নীতি রয়েছে, যা অনুসরণ করে মানুষ পোষাকের কল্যাণ লাভ করতে পারে এবং পোষাকের অকল্যাণ থেকে রক্ষা পেতে পারে।
বিস্তারিত রিভিউঃ
পোষাকের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য হলো সতর ঢাকা। ইসলামের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত নামাযে সতর ঢাকা ফরয়। পুরুষের নাভি থেকে হাঁটুর নিচ পর্যন্ত আর নারীর মুখমণ্ডল, টাখনু পর্যন্ত পা ও কব্জি পর্যন্ত হাত ছাড়া গোটা শরীর নামাযে আবৃত রাখা ফরয। তদ্রূপ গায়রে মাহরাম ও পরপুরুষের সামনে মুখমণ্ডলসহ গোটা শরীর আবৃত রাখাও জরুরি। অতএব পোষাকের মাধ্যমে যাতে এই প্রয়োজন পূরণ হয় সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখা অপরিহার্য।
এত সংক্ষিপ্ত পোষাক পরিধান করা যে, সতর বা সতরের কিছু অংশ খোলা থাকে বা এত পাতলা কাপড় ব্যবহার করা যে, শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ দৃষ্টিগোচর হয়, পুরুষ মহিলা সবার জন্যই হারাম ও নিষিদ্ধ। তদ্রূপ এত আঁটসাঁট পোষাক, যার উপর দিয়ে শরীরের আবরণীয় অঙ্গসমূহ ফুটে ওঠে তাও বর্জনীয়। পুরুষের জন্য প্রচলিত জিন্সের প্যান্ট বা সাধারণ আঁট-সাট প্যান্ট পরিধান করা অনুচিত। উপরন’ তা পরা হয় টাখনুর নিচে ঝুলিয়ে, যা একটা হারাম কাজ।প্রথম অধ্যায়ে লেখক উপরোক্ত বিষয়গুলো সুন্দর ভাবে আলোচনা করেছেন।
দ্বিতীয় অধ্যায়ে সম্মানিত লেখক পোশাক পরিধানের ক্ষেত্রে আমরা কাকে অনুসরন করব সে বিষয়টি আলোচনা করেছেন। আল্লাহ তায়ালা কুরআন মাজীদে বলেছেন-
তোমাদের জন্য আল্লাহর রসূলের মধ্যে উত্তম আদর্শ রয়েছে যারা আল্লাহ ও শেষ দিনের আশা রাখে আর আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে।আহযাব-২১
পশ্চিমাদের অনুকরণে মুসলিম মহিলাদের মাঝেও যে পোষাকের প্রচলন ঘটছে তাতে প্রশ্ন জাগে যে, তাদের কাছে পোষাকের দর্শন আসলে কী? শরীর আবৃত করা, না কিছু অংশ আবৃত করে বাকি অংশ আরো প্রকাশিত করা। পোষাকের হাতা, আঁচল দিন দিন সংক্ষিপ্ত হচ্ছে। অন্যদিকে কাঁধ ও গলার পরিধি প্রশস্ত হচ্ছে। অর্থাৎ যত দিন যাচ্ছে পোষাক অধিকার হারাচ্ছে শরীরের উপর থেকে। ভেবে দেখা উচিত, পশ্চিমা সভ্যতা যদি তার আদি অবস্থায় ফিরে যেতে চায় আমরাও কি তা চাইতে পারি?
তৃতীয় অধ্যায়ে সুন্নাতের আলোকে পোশাকের ধরন অধ্যায়ে।পুরুষের পোষাক পুরুষোচিত আর নারীর পোষাক নারীর উপযোগী হওয়া কাম্য। স্বভাবগতভাবেই পুরুষকে শক্তি ও দৃঢ়তা দেওয়া হয়েছে। কারণ তার কর্মক্ষেত্র হল বাইরের পৃথিবী। তাই কোমল ও বর্ণিল সাজসজ্জা পুরুষের প্রকৃতি ও দায়িত্বের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। পক্ষান্তরে নারীকে আল্লাহ তাআলা দান করেছেন কোমলতা ও কমনীয়তা। মাতৃত্বের মমতা ও নারীত্বের লাজ- নম্রতাই হচ্ছে নারীর স্বভাব-সৌন্দর্য। পোষাকের বিষয়ে শরীয়তের নির্দেশনা নর-নারীর সৃষ্টি-প্রকৃতির সাথে পুরোপুরি সামঞ্জস্যপূর্ণ।
ইসলামে রেশমের পোষাক পুরুষের জন্য নিষেধ, কিন্তু নারীর জন্য অনুমোদিত। স্বর্ণের ব্যবহার নারীর জন্য জায়েয, কিন্তু পুরুষের জন্য হারাম। যেকোনো রংয়ের কাপড় নারীরা পরিধান করতে পারে, কিন্তু পুরুষের জন্য কিছু কিছু রং অপছন্দনীয়।
চতুর্থ অধ্যায়ে মহিলাদের পোশাক ও পর্দা বিষয়ে মহিলাদের পোশাকের একটি শর্ত হচ্ছে তাদের পোশাক এমন হতে হবে যা অন্যের দৃষ্টি আকর্ষণ না করে।
পুরুষ ও মহিলাদের ক্ষেত্রে কাপড় হতে হবে মোটা যাতে তাদের শরীরের গঠন প্রকৃতি দেখা না যায়। কাপড় যেন পাতলা না হয়। পোশাক অবশ্যই ঢিলা হতে হবে, যাতে তা টাইট বা সংকীর্ণ না হয় এবং শরীরের অবয়ব বোঝা না যায়। নবী করিম (সা.) বলেন, ‘আমার উম্মতের মধ্যে দুই শ্রেণির লোক জাহান্নামি হবে যাদের আমি কখনো দেখিনি। তার মধ্যে একশ্রেণি হচ্ছে সেসব মহিলা যারা পোশাক পরিধান করেও উলঙ্গ থাকবে। এরা পরবর্তীতে দুনিয়ায় আসবে। তাদের এ অবস্থার কারণ হলো তারা এমন পাতলা পোশাক পরবে যেন সে পোশাকই পরেনি। ’ উল্লেখ্য, বর্তমান কালেই সেসব নারীর আগমন লক্ষ্য করা যায়। মহিলারা যে কাপড় পরবে তাতে সুগন্ধি করা হারাম।
নারীর পোশাক পুরুষের সাদৃশ্য হওয়া যাবে না এবং পুরুষের পোশাকও যেন নারীর সাদৃশ্য না হয়। যাতে তাদের পোশাক দেখে নারী-পুরুষের পার্থক্য অনুমান করা যায়। রসুল (সা.) বলেন, মহিলাদের মধ্য থেকে যারা পুরুষের সাদৃশ্যতা অবলম্বন করে এবং পুরুষের মধ্য থেকে যারা মহিলাদের সাদৃশ্যতা অবলম্বন করে তাদের ওপর তিনি আল্লাহর রহমত থেকে বঞ্চিত হওয়ার অভিশাপ দিয়েছেন।
এছাড়াও নারীর সতর,মুখমন্ডল ও দুহাত সতরের পর্যায় কিনা,প্রকাশ্য সৌন্দর্য, অপ্রকাশ্য সৌন্দর্য,হাতমোজা-পা মোজাও প্রচলিত পোশাকাদি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা।
পরিষ্কার ও শালীন পোষাক পরিধান করা এবং চুল ও দাড়ি পরিপাটি রাখা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সুন্নত ও নির্দেশনা। হাদীস শরীফে আছে, নবীয়ে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে বসা ছিলেন, ইতিমধ্যে এক ব্যক্তি মসজিদে প্রবেশ করল, যার চুল ও দাড়ি ছিল এলোমেলো। নবীজী তাকে হাতের ইশারায় পরিপাটি হয়ে আসতে বললেন। তিনি পরিপাটি হয়ে এলেন। নবীজী তখন ইরশাদ করলেন, কেউ মাথার চুল আউলিয়ে মূর্তিমান শয়তানের মতো উপসি’ত হওয়ার চেয়ে বর্তমান বেশটি কি উত্তম নয় ।’
অনেক সময় মহিলারা নিজের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য পরচুল লাগিয়ে থাকে ও শরীরে উল্কি আকায়।এ প্রসঙ্গে হাদীসে বলা হয়েছে-
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। যে মহিলা পরচুলা লাগিয়ে দেয় এবং যে পরচুলা লাগাতে বলে, আর যে মহিলা অঙ্গ প্রত্যঙ্গে উল্কি উৎকীর্ণ করে ও উল্কি উৎকীর্ণ করতে বলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদেরকে অভিশাপ করেছেন। -[সহীহ বুখারী ৫৯৩৭, ৫৯৪০, ৫৯৪২, ৫৯৪৭] এছাড়াও দাড়ি রাখা প্রসঙ্গে,গোফ,নখ কাটা,ভ্রু উঠানো ও নাক কান ফোড়ানো ইত্যাদি বিষয়গুলো আলোচনা করেই পঞ্চম অধ্যায় শেষ করেছেন।
পোষাক শুধু বাইরের খোলস নয়, রুচি ও মানসিকতারও বার্তাবাহক। উপরন্তু আত্মিক উন্নতি বা অবনতির মাধ্যম। তাই এ বিষয়ে অবহেলা নয়, নয় গড্ডলিকা প্রবাহে গা ভাসানো। সচেতনভাবে সেই লেবাসই গ্রহণ করা উচিত যা মুত্তাকী ও আল্লাহভীরু হতে সাহায্য করে। নিঃসন্দেহে সেটিই উত্তম লেবাস। পোশাক সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে বইটির বিকল্প নেই।তাই বইটি পড়ার আহবান জানিয়ে শেষ করছি।
পরিশেষে আল্লাহ তা’য়ালা আমাদের সবাইকে তাঁর দ্বীনের খেদমতের জন্য কবুল করুন! রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও সাহাবা (রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুম)-গনের আদর্শের উপর সর্বদা কায়েম রাখুন! তাঁদের বরকতময় জামাআতের সংগে আমাদের হাশর করুন! আ-মী-ন।
কুরআন-সুন্নাহর আলোকে পোশাক, পর্দা ও দেহ-সজ্জা
[রিভিউ লেখক : আনোয়ার হোসাইন ]
যে কোন ইসলামী বই পেতে ইসলামিক বইঘর.কম এর সাথেই থাকুন
বি:দ্র: কুরআন-সুন্নাহর আলোকে পোশাক, পর্দা ও দেহ-সজ্জা বইটি free pdf download করিতে চাহিয়া লেখকদের নিরুৎসাহিত করিবেন না
Reviews
There are no reviews yet.