দুখের পরে সুখ
মাসনুন ও গাইরে মাসনুন দুআর মধ্যকার পার্থক্য নির্ণয় করা জরুরী। দুঃখজনকভাবে অনেকেই এই দুইটার মধ্যে পার্থক্য করতে পারেন না। তারা উভয়টিকে সমান কাতারে নামিয়ে আনেন। আবার অনেকে ঠিক এর উল্টো পথে হাঁটেন। তারা গাইরে মাসনূন দুআগুলোকে বিদআত মনে করে বসে থাকেন। এই বাড়াবাড়ি ও ছাড়াছাড়ি উভয়টাই নিন্দনীয়।
যেসব দুআ সরাসরি কুরআন-সুন্নাহতে বর্ণিত হয়েছে সেগুলোর ফায়দা ও ফযীলত অনস্বীকার্য। তবে মনে রাখতে হবে দুআর বিষয়টি অনেক ব্যাপক ও বিস্তৃত। শরীয়ত এতে অনেক ছাড় দিয়েছে। যতক্ষণ না শরীয়ত বিরোধী কিছু পাওয়া না যাবে ততোক্ষণ একজন বান্দা নিজের মন মতো যে কোন দুআ করতে পারবে। এতে কোন বাধা-নিষেধ নাই। পাশাপাশি পূর্ববর্তী নেককার বান্দাগণ যেসব দুআ করেছেন সেগুলো দিয়েও দুআ করার সুযোগ আছে। শুধু শর্ত হলো একে মাসনুন বা সুন্নাহতে বর্ণিত দুআ মনে করা যাবে না। মাসনুন দুআর সমকক্ষ একে ভাবা যাবে না। এই শর্ত মেনে কেউ যদি সেসব দুআ করে তবে নিষেধ নাই।
আমাদের উক্ত গ্রন্থে অর্থাৎ ‘দুখের পরে সুখ’ গ্রন্থে সালাফে সালেহীন থেকে বর্ণিত বিভিন্ন দুআর কথা উল্লেখ আছে। নানান রকম ঘটনায় সেসব দুআর মাধ্যমে উপকার লাভ করার কোথাও আছে। কেউ যদি চায় তবে পূর্বেল্লিখিত শর্ত মেনে তিনি তা আমলও করতে পারেন। দুআর বাক্যসমূহ শরীয়ত কর্তৃক বিধিবদ্ধ করে না দেওয়ার কারণে বিষয়টিতে প্রশস্ততাও আছে। তবে এসব দুআর মাধ্যমে উপকৃত হওয়াটা আসলে ইখলাসেরই ফল।
সালাফদের জিবনীতে আমরা এমন সব দুআকে গ্রহণ করে নেওয়ার নজিরও দেখতে পাই। উক্ত গ্রন্থেই আমরা এর কিছু দৃষ্টান্ত দেখতে পাবো। যেমন তাউস রাহিমাহুল্লাহ একবার আলী বিন হুসাইন রাহিমাহুল্লাহ-কে একটি দুআ করতে শুনে সেটি মুখস্ত করে নেন। তিনি বলেন, ‘পরবর্তীতে যে কোন বিপদে পড়ে এই দুআ পড়লে আমি বিপদমুক্ত হতাম।’
আমর আস-সারায়া নামক একজন শত্রুর হাতে বিপদে পড়ার পর একটি দুআ করে মুক্তি লাভ করেন। পরবর্তীতে বিনতে দাউদের সন্তান ইসহাক বলেন, ‘আমি নিজে এই দুআ পরীক্ষা করে দেখেছি। মানুষদেরকেও তা শিখিয়েছি। তারা এতে উপকার পেয়েছে। আসলে এটা মূলত ইখলাসের ফসল।’
মোটকথা হলো, এই গ্রন্থে দুই ধরনের দুআ পাওয়া যাবে। এক. সুন্নাহতে বর্ণিত দুআ। একে মসনূন দুআ বলা হয়। দুই. অভিজ্ঞতার আলোকে প্রমাণিত দুআ। একে মুজাররাব দুআ বলা হয়। উভয় প্রকার দুআই ভালো। তবে এই দুই ধরনের দুআর মধ্যে সবচে উত্তম ও কার্যকরী দুআ হচ্ছে সেসব দুআ, যা হাদীসে বর্ণিত হয়েছে। সরাসরি রাসূল সালাল্লাহু আলিহি ওয়াসাল্লাম-এর মুখনিঃসৃত হওয়ায় এসকল দুআ কবুল হওয়ার সম্ভবনা বেশি থাকে। এই বিষয়ে আশরাফ আলী থানবী রাহিমাহুল্লাহ বলেছেন, ‘হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর শব্দের অনুসরণ (দুআর মধ্যে) অধিক বরকতপূর্ণ আমল।’
বি:দ্র: দুখের পরে সুখ বইটি free pdf download করিতে চাহিয়া লেখকদের নিরুৎসাহিত করিবেন না
Reviews
There are no reviews yet.