দাসত্বের মহিমা
স্বাধীনতা হলো অন্তরের স্বাধীনতা। দাসত্ব হলো অন্তরের দাসত্ব। একইভাবে সচ্ছলতাও হলো অন্তরের সচ্ছলতা। নবিজি স. বলেছেন,”ধনের আধিক্য থেকে সচ্ছলতা হয় না। সচ্ছলতা হলো অন্তরের সচ্ছলতা।” [সহিহ বুখারি : ৬৪৪৬; সহিহ মুসলিম : ১০৫১]
ওপরে আমরা অন্তরের গোলামির যেসব কথা বললাম, আল্লাহর কসম, এ কথাগুলো তো সে ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে, যে ক্ষেত্রে ব্যক্তি তার অন্তরকে কোনো বৈধ রূপের গোলাম বানিয়ে ফেলে। অর্থাৎ তার প্রেমের কেন্দ্রবিন্দু হয় নিজ স্ত্রী অথবা মালিকানাভুক্ত দাসী। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি তার অন্তরকে কোনো হারাম রূপের—হোক তা নারী কিংবা শ্মশ্রুবিহীন ছোট বালক—গোলাম বানিয়ে ফেলে, এটা তো এমন জলজ্যান্ত আজাব, যার ধারেকাছে অন্য কোনো আজাব হতে পারে না।
এরা হলো সে সকল মানুষ, পরকালে যাদের শাস্তি হবে সবচেয়ে গুরুতর, আর তাদের সওয়াব হবে সবচেয়ে স্বল্প। কারণ, যে ব্যক্তি কোনো অবৈধ রূপের প্রেমে পড়ে, তার অশান্ত আত্মা যখন তার সঙ্গে আষ্টেপৃষ্ঠে জুড়ে থাকে, স্বাধীন মানুষ হয়েও সে তখন রূপ-লাবণ্যের প্রেমে নিত্য পরাধীন থাকে, সে সময় তার গোটা অস্তিত্বজুড়ে এত অধিকসংখ্যক অনিষ্ট এবং ফ্যাসাদ একত্র হয়, যার সঠিক পরিসংখ্যান একমাত্র মহান প্রতিপালকই করতে পারবেন।
যদি সে বড় অশ্লীলতা থেকে বেঁচেও থাকে, তবুও এর ক্ষতি লঘু হয়ে যায় না। কারণ, যে ব্যক্তি কোনো অপকর্মে লিপ্ত হয়ে যায়, এরপর তা থেকে তাওবা করে নেয়, তার অন্তর থেকে গুনাহকৃত বিষয়ের প্রভাব দূর হয়ে যায়। অপরদিকে যে ব্যক্তি বড় অশ্লীলতায় লিপ্ত হয় না ঠিক; কিন্তু সর্বদা তার হৃদয়রাজ্যে বিচরণ করে মর্তের কোনো রূপসী মানবী কিংবা কামনাময়ী কোনো বালকের হৃদয়কাড়া মুখশ্রী, এটা তার জন্য এতটাই ক্ষতির কারণ হয়, যা প্রথমোক্ত ব্যক্তির ক্ষতিকেও নিমিষেই হার মানায়।
এই প্রেমাসক্তদের মাতাল এবং উন্মাদদের সঙ্গে তুলনা করলেই কেবল তা আক্ষরিক অর্থে যথার্থ তুলনা হয়। যেমন কবি বলেছেন,
‘নেশাগ্রস্ততা তো হলো প্রবৃত্তির নেশা ও মদের নেশা। যে নেশাগ্রস্ততায় আক্রান্ত, তার চেতনা কখন ফিরবে?’
আরেক কবি বলেন,
‘মানুষ বলে, তুমি যাকে ভালোবাসো, তার প্রেমে দেখি পাগল হয়ে গেছ! আমি তাদের বলি, প্রেমই তো পাগলদের সবচেয়ে বড় পাগলামি। প্রেম যুগ-যুগান্তে তার আসক্তকে সুস্থ হতে দেয় না। আর পাগল তো একসময় ভূপাতিত হয়ই।’
বি:দ্র: দাসত্বের মহিমা বইটি free pdf download করিতে চাহিয়া লেখকদের নিরুৎসাহিত করিবেন না
Reviews
There are no reviews yet.