ঈমান ভঙ্গের কারণ
ঈমান ভঙ্গের ১০টি কারণ ব্যাখ্যা করার পর বইয়ের শেষে শাইখ উলওয়ান একটি পরিশিষ্ট লিখেছেন। এই বইয়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ এটি। তিনি লিখেছেন,
পাঠক!
ইতোপূর্বে আমরা এমন সব বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি, যা ঈমানকে ধ্বংস করে, আমলকে বরবাদ করে; এবং ব্যক্তিকে জাহান্নামের স্থায়ী বাসিন্দা বানিয়ে ছাড়ে। আমরা তা পড়েছি এবং অবগতি লাভ করেছি। সুতরাং এখন আমাদের জেনে নেয়া উচিৎ যে, যদি কোনো মুসলিম এমন কোনো কথা বলে, কিংবা এমন কোনো কাজ করে, যা কুরআন-সুন্নাহ এবং ইমামগণের ইজমা-কিয়াসের ভিত্তিতে কুফরি, এবং ঐ ব্যক্তি ইসলাম থেকে বেরিয়ে যায়। তথাপি, আলিমগণের ভাষ্যমতে কারো থেকে কুফরি প্রকাশ পেলেই তাকে নির্দিষ্টভাবে তাকফীর তথা কাফির বলে দেয়া সঙ্গত নয়।
সুতরাং কারো থেকে কুফরি কাজ প্রকাশ পেলেই তাকে ‘কাফির’ বলে দেওয়া যাবে না। কেননা কথা বা কাজ কখনো কখনো কুফুরি হলেও—ঢালাওভাবে কুফরির হুকুম ঐ বক্তা বা কর্তার উপরে ছুড়ে দেয়া যায় না। কিছু নিয়মকানুন অবশ্যই আছে। হতে পারে তার থেকে তাকফীরের শর্ত ও আলামত প্রকাশ পেয়েছে বটে, তবে তা প্রয়োগে কোন না কোনো প্রতিবন্ধকতা বিদ্যমান! যেমন—লোকটি হয়তো ইসলামে নতুন। সে হয়তো কোনো কুফরি কাজ করে বসলো, কিন্তু সে জানে না যে এটা কুফরি। পরে যখন জানল, বিষয়টা তার কাছে সুস্পষ্ট হয়ে ধরা দিলো—তখন সে তার ভুল বুঝতে পারলো, এবং অনুতপ্ত হয়ে ফিরে এলো। তাই তাকফীরের ক্ষেত্রে এরকম অনেক প্রতিবন্ধকতা রয়েছে।
এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। খুব গুরুত্বের সাথে মনোযোগ দিয়ে বোঝা উচিৎ। কেননা তাকফীর করা মাখলুকের অধিকার না যে—মন চাইলো, আর যাকে তাকে কাফির ফাতওয়া দিয়ে দিলো। বরং আবশ্যক হলো সালফে সালিহীনের বুঝ মোতাবেক কুরআন ও সুন্নাহর দিকে ফিরিয়ে দেয়া। অতঃপর আল্লাহ ও আল্লাহর রাসূল (সাঃ) যাকে কাফির বলেছেন, এবং এই রকম কোনো প্রমাণ যার ব্যাপারে প্রতিষ্ঠিত হয়, তো সে কাফির, অন্যথায় সে কাফির নয়।
সহিহ বুখারি ও মুসলিমে একটি হাদীস উল্লেখ করা হয়েছে, যা আবু হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। প্রিয়নবী (সাঃ) বলেন,
“পূর্বযুগে এক লোক অনেক পাপ করেছিল। যখন তার মৃত্যুকাল ঘনিয়ে এলো, সে তার পুত্রদেরকে ডেকে বলল, ‘মৃত্যুর পর আমার দেহ-হাড় মাংসসহ পুড়িয়ে ছাই করে নিও। এরপর প্রবল বাতাসে তা উড়িয়ে দিও। আল্লাহ্র কসম! যদি আল্লাহ্ আমাকে ধরে ফেলেন—তাহলে তিনি আমাকে এমন কঠিনতম শাস্তি দিবেন যা পৃথিবীর অন্য কাউকে দেননি।’ প্রিয়নবী (সাঃ) বলেন, ‘যখন তার মৃত্যু হল, তখন পরিবারের লোকেরা তাই করল। অতঃপর আল্লাহ্ জমীনকে আদেশ করলেন, তোমার মাঝে ঐ ব্যক্তির যা আছে জমা করে দাও। যমীন তা করে দিলো। এ ব্যাক্তি তখনই দাঁড়িয়ে গেল। আল্লাহ্ তাকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘কিসে তোমাকে এই কাজ করতে উদ্বুদ্ধ করল?’ সে বলল, ‘হে প্রতিপালক! কেবল আপনার ভয়। অতঃপর আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দিলেন।”
শাইখুল ইসলাম ইবনু তাইমিয়া (রহঃ) তাঁর মাজমূউল ফাতাওয়ার ১৩ নং খন্ডের ২৩৩ নং পৃষ্ঠায় বলেন, “লোকটির এই কথা বলা— ‘আমাকে পুড়িয়ে তার ছাইগুলো বাতাসে উড়িয়ে দিও’ মানেই হলো সে আল্লাহর কুদরত, সক্ষমতা, এবং পুনরুত্থান দিবসের ব্যাপারে সন্দেহ পোষণ করছে। বরং সে বিশ্বাস করেছে—এমনটা করা হলে তাকে আর পুনরুত্থিত করা হবে না। এই ধরণের বিশ্বাস সকল মুসলিমের মতেই কুফরি। কিন্তু লোকটি ছিল অজ্ঞ। সে তা জানত না। সে ছিল এমন এক মুমিন—যে আল্লাহর ভয়ে ভীত! তাই এ কারণে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দিয়েছেন। তবে ইমামগণের সিদ্ধান্ত হলো—এই ভাবে ক্ষমা প্রার্থনার চেয়ে রাসূল (সাঃ)-এর আনুগত্যের উপর বেশি গুরুত্ব দেয়া অধিক উত্তম এবং ফলপ্রসূ।”
ইবনু তাইমিয়্যাহ (রহঃ) তাঁর “মাসাইলুল মারিদীনিয়্যাহ” নামক কিতাবের ৭১ নং পৃষ্ঠায় বলেন, “এ বিষয়ের মৌলিক কথা হচ্ছে, কথাটা যদি সুস্পষ্ট কুফরি হয়, তাহলে ঐ কথার বক্তাকে সাধারণভাবে তাকফীর করা হবে। নির্দিষ্ট করে নয়। (অর্থাৎ আমভাবে তার ঐ কথাকে তাকফীর করা হবে, নির্দিষ্টভাবে ঐ ব্যক্তিকে নয়) যেমন বলা হবে, ‘যে এমন কথা বলে, সে কাফির!’ কিন্তু কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে—যে এমনটা বলেছে তাকে কাফিরে বলে দেয়া যাবে না—যতক্ষণ না তার উপর ‘কাফির’ ফতোয়া দেয়ার মত কোনো দলিল প্রমাণিত হয় এবং কোনো প্রতিবন্ধকতা না থাকে।”
মোটকথা, বিজ্ঞ আলিমগণের সিদ্ধান্ত হলো কর্মকে তাকফীর এবং কর্তাকে তাকফীর করার মাঝে পার্থক্য আছে। অনুরূপ বিদ’আতের ক্ষেত্রেও। কথা অথবা কর্মকে বিদ’আত বলা, বক্তা এবং কর্তাকে বিদ’আতি সাব্যস্ত করার মাঝেও তফাৎ আছে। সুতরাং কেউ বিদ’আতের কাজ করলেই তাকে বিদ’আতি বলে দেয়া যাবে না।
যে ব্যক্তি আসলাফগণের জীবনীর দিকে তাকাবে—সে এই আলোচনার বাস্তবতা বুঝতে পারবে। উপলব্ধি করতে পারবে তাদের মতামত ও সিদ্ধান্ত দানের পদ্ধতিটা এমনই ছিল। সে দেখতে পাবে—তাঁরা কতটা বাড়াবাড়ি মুক্ত এবং ন্যায় ও ইনসাফের উপর প্রতিষ্ঠিত ছিলেন। সত্যের পক্ষে বলতেন—আবার মানুষের কল্যাণকামিতা ও হিদায়াতের ব্যাপারেও দিল ভরা আকাঙ্ক্ষা রাখতেন। এ কারণে আল্লাহ তাদের ইলমে নাফি’ (উপকারী ইলম) এবং আমালে সালিহার (নেক কাজ) দ্বারা বিশেষায়িত করেছেন। শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন। অতএব, সকলের জন্য আবশ্যক হলো ন্যায়-ইনসাফের সাথে ভারসাম্যপূর্ণ মনন নিয়ে বাতিলের মূলোৎপাটন এবং সত্য প্রকাশ ও প্রতিষ্ঠায় লক্ষ্যকে স্থির করা। অভিন্নভাবে কাজ করে যাওয়া। যতক্ষণ না দ্বীন পুরোপুরিভাবে আল্লাহর জন্য হয়ে যায়।
বি:দ্র: ঈমান ভঙ্গের কারণ বইটি free pdf download করিতে চাহিয়া লেখকদের নিরুৎসাহিত করিবেন না

কেমন হবে রবের জান্নাত
সিরাতের সৌরভ
ইসলাম ও আমাদের জীবন-১৩ : দ্বীনী মাদরাসা উলামা ও তলাবা
দ্য সিক্রেট অব দ্য টেম্পল
কিয়ামত আসবে যখন
মরনের পরে কি হবে
মৃত্যুর পরে অনন্ত জীবন
আহকামুল হাদীস
কীভাবে পড়বেন?
পরকালের পথে যাত্রা
দুনিয়া ও আখেরাত (মাওয়ায়েযে আশরাফিয়া ১ম ও ২য় খন্ড)
জীবন যেভাবে সুখের হয়
আরবী পত্রিকার ভাষা ও আরবী বক্তৃতা শিখার পদ্ধতি
জাহান্নামের ভয়াবহ আযাবের বর্ণনা
মৃত্যু যবনিকার ওপারে
জান্নাত-জাহান্নাম
আলোর পথে
আল্লাহর পথের ঠিকানা
সিরাতে মুস্তাফা (১-৩ খণ্ড)
বাংলায় ইসলাম ও মুসলিম সভ্যতা
মৃত্যু
মদিনার ইতিহাস নববী যুগ থেকে বর্তমান
কেয়ামত আর কত দূর
আলো ফোটা ভোর
রিয়াদুস সালেহীন (১ম-৪র্থ খণ্ড)
কবর
কারা জান্নাতী কুমারীদের ভালবাসে-২
জান্নাতের কুঞ্জী
পরকাল অনন্ত জীবনের পথে
রাসূলে আরাবি (সা.)
মুসলিম উম্মাহর ইতিহাস দাওয়াহ সংস্করণ (১৫-১৭)
ইউভাল হারারি পাঠ ও মূল্যায়ন
বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ) এর জীবনী
ইসলামে রোজা ও যাকাতের বিধান
আল্লাহকে আপন করে নিন
ফুটস্টেপস অব প্রোফেট
নবীপ্রেম
মহাপ্রলয় থেকে অনন্ত জীবন
মৃত্যুর পরে অনন্ত যে জীবন
মৃত্যু ও কবরের সুখ-দুঃখ
শাতিমে রাসূলের শাস্তি
পরকাল
আস সীরাতুন নববীয়্যাহ
চোখে দেখা কবরের আযাব
শয়তানের ধোঁকা
মহাবিশ্বের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব
হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) জীবন ও আদর্শ
জাহান্নামের বর্ণনা
আলোর আবাবিল
তুমি কি তোমার রবকে চেনো?
দুজন দুজনার
আবু বাকর আস সিদ্দিক: জীবন ও শাসন
মুসলমানদের পতনে বিশ্ব কী হারালো
বয়কট
তোমাকে ভালবাসি হে নবী
জীবনের রকম-ফের
মহানবীর (সা.) মহান জীবন (১ম খণ্ড)
মরণের আগে ও পরের জীবন
কারবালার কান্না
জাহিলিয়াতের ইতিবৃত্ত
ইসলাম আপনাকে যেভাবে দেখতে চায়
হারুত মারুত
কোরআন ও হাদীসের আলোক জান্নাতের অফুরন্ত নিয়ামত
বন্দিনীদের অশ্রু
নবিজির মেহমানদারি
রাসূলুল্লাহ সা.-এর নীতি ও সংস্কার
মুয়াজজিন
মানচিত্রে সিরাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
হুদাইবিয়ার সন্ধি
মুসলিম ইতিহাসে উত্থান-পতন
দ্য মেসেঞ্জার : দি মিনিংস অব দ্য লাইফ অফ মুহাম্মদ (সা.)
দ্য প্রিন্সেস অব উইঘুর
সোরাকার মুকুট
আব্বাসি খিলাফাহ
রক্তাক্ত ভারত
এই আমাদের গল্প
সেদিন মেঘলা ছিল
বিশ্বনবি মুহাম্মাদ সা.
লাহোর থেকে বোখারা সমরকন্দ
জাহান্নাম বিষয়ক চল্লিশ হাদীস
এক 
Reviews
There are no reviews yet.