আমার দেখা তুরস্ক : বিশ্বব্যবস্থার নতুন শক্তি তুর্কি জাতির ভেতর বাহির
ইউরোপের রুগ্ন দেশ তুরস্ক হঠাৎ করেই বদলে গেল। উসমানি ঘোড়ার খুর আবার শব্দ করে ছুটতে শুরু করল। বিশ্বব্যবস্থার নতুন শক্তি হয়ে ওঠা তুরস্ক নিয়ে বাংলাভাষী পাঠকদের অনুসন্ধিৎসু চোখের চাহনি আমরা উপলব্ধি করতে পারি। বাংলাদেশী তরুণ হাফিজুর রহমান বদলে যাওয়া তুরস্কের ভেতর-বাহিরের স্কেচ এঁকেছেন।
স্কেচটা দেখবেন একটু?
বি:দ্র: আমার দেখা তুরস্ক : বিশ্বব্যবস্থার নতুন শক্তি তুর্কি জাতির ভেতর বাহির বইটি free pdf download করিতে চাহিয়া লেখকদের নিরুৎসাহিত করিবেন না

ইন দ্য হ্যান্ড অব তালেবান
মুহাম্মদ বিন কাসিম : জীবন ও সংগ্রাম
হজরত সুলাইমান আলাইহিস সালাম
তাওহীদের মাসায়িল
পুত্রের প্রতি পিতার পত্র ও উপদেশ
উম্মাতের প্রতি ঐক্যের আহবান
ব্যস্ততার এ যুগে ইলম অন্বেষণ
বড়দের বড়গুণ
সোনালী যুগের মুফাসসিরীনে কেরাম
আব্দুল্লাহ ইবনে মুবারক রহ. জীবন ও কর্ম
বড়পীর শায়খ আবদুল কাদের জিলানী (র)
হজ ও উমরার সহজ গাইড
আমরা আবরাহার যুগে নই
আজব প্রশ্নের-আজব উত্তর -যে প্রশ্নে মাথা খুলে
এক মলাটে কয়েকজন নবী ১খণ্ড
কুরআন প্রেমিকদের অমর কাহিনী
আল ওয়ালা ওয়াল বারা
সুনান আন-নাসাঈ ৪র্থ খণ্ড
কাসাসুল হাদিস -০২
ইসলাম ও বিজ্ঞান
ইসলাম ও সমকালীন ভাবনাগুচ্ছ
ছোটদের ইমাম বুখারী রহ.
তাতারিদের ইতিহাস (দুই খণ্ড)
শাহজাদা
হযরত মুহাম্মদ (সা.) এই পৃথিবীকে কী দিয়েছেন
এহইয়াউ উলুমিদ্দীন (১ম-৫ম খন্ড একত্রে)
প্রাচ্যবিদদের দাঁতের দাগ
ছোটদের ইমাম আযম আবু হানীফা (রহ.)
কাসাসুল আম্বিয়া
যেমন কর্ম তেমন ফল
মুক্তার চেয়ে দামী (৭-৮ খন্ড)
আহকামুন নিসা (বক্স সম্বলিত অফসেট)
তাফসীর ফী যিলালিল কোরআন (১২তম খন্ড)
আলোকিত নারী
ভালোবাসার চাদর
আসহাবুল কুরআন : কুরআনের অমর কাহিনীগুচ্ছ
কাবার পথে (দুই খণ্ড)
আসহাবে রাসূলের জীবনকথা (১ম-৭ম খণ্ড)
ইতিহাসের কাঠগড়ায় হযরত মুআবিয়া রা.
ফিলিস্তিনের জন্য ভালোবাসা
ইসলামে দাড়ির বিধান
প্রাচ্যের উপহার
আপনার যা জানতে হবে
সময়ের মূল্য বুঝতেন যাঁরা
এরদোয়ান দ্যা চেঞ্জ মেকার
গল্প থেকে শিক্ষা
প্রশ্নোত্তরে সীরাতুন্নবি সা.
মনিষীদের স্মৃতিকথা
প্রিয়নবীর প্রিয় সাহাবি
ফাযায়েলে কোরআন
পশ্চিমা মিডিয়ার স্বরূপ
আমি কারো মেয়ে নই
AN APPEAL TO COMMON SENSE
বাংলা ভাষার বানানরীতি
ইতিহাসের মৃত্যুঞ্জয়ী মহাবীর শহীদ টিপু সুলতান
সুপ্রভাত মাদরাসা
সুনান আন-নাসাঈ ৫ম খণ্ড
সফল জীবনের খোজে
ছোটোদের মহানবী
আরবের আলেমরা কি মাযহাব ও তাকলীদের বিরোধী?
আমালিয়াতে কাশমিরী
রেশমি রুমাল আন্দোলন
কুরআন অধ্যয়নের মূলনীতি
দাড়ি
বৈরী বসতি
ইউনিভার্সিটির ক্যান্টিনে
মনোরোগের চিকিৎসা
বিশ্বায়ন সাম্রাজ্যবাদের নতুন স্ট্রাটেজি
দৈনন্দিন দুয়া ও রুকইয়াহ
রিয়াদুস সালেহীন (২য় খন্ড)
আল কুরানের জ্ঞান বিজ্ঞান (উলুমুল কুরআন)
সহিহভাবে কুরআন শিক্ষা তাজওইদ
মুহররম ও আশুরার ফযিলত
নবীপ্রেম
মমাতি
কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে অমুসলিম ও মুসলিম দেশে দীন প্রতিষ্ঠায় মুসলমানদের করণীয়
তাবিজাত
তুরস্কে তুর্কিস্তানের সন্ধানে
ভালো ছাত্র হওয়ার বৈজ্ঞানিক অভিনব কৌশল
পিচ্ছিল পাথর 
Farjana jannat –
বই : আমার দেখা তুরস্ক
লেখক : হাফিজুর রহমান
বর্তমান বিশ্বে তুরস্ক একটি গুরুত্বপূর্ণ দেশ। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর অটোম্যান সাম্রাজ্যের পতনে খন্ড খন্ড হয়ে যায় তুরস্ক। ৬০০ বছরের উসমানীয় সাম্রাজ্যের পতন ঘটিয়ে আধুনিক তুরস্কের জন্মদাতা কামাল আতাতুর্ক নতুন করে তুরস্ককে গড়ে তোলেন। ফলে মুসলিম বিশ্বে খিলাফত ব্যাবস্থা বিলুপ্ত হয়। কিন্তু বসফরাসের তীর পেরিয়ে তুরস্ক এখন আবার পুনরুত্থান ঘটিয়ে বিশ্ব রাজনীতিতে প্রভাবশালী হয়ে উঠেছে। শক্তিশালী ইউরোপের বুকে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে উঠেছে। একটি রুগ্ন দেশ হটাৎ যখন এভাবে বদলে গিয়ে মাথাচাড়া দিয়ে দাঁড়িয়ে সমগ্র বিশ্বকে অবাক করিয়ে দেয় তখন সে দেশের ইতিহাস, সংস্কৃতি, সমাজব্যবস্থা, রাজনৈতিক ব্যবস্থা জানতে প্রতিটা কৌতূহলী মন আগ্রহী হয়ে ওঠে।
আমার দেখা তুরস্ক বইটিতে তরুণ লেখক হাফিজুর রহমান তুরস্ক দেশটিকে সুন্দর একটা স্কেচে তুলে ধরেছেন। তুরস্কের অতীত ইতিহাস, বর্তমান অবস্থা, সামাজিক অবস্থা, রাজনৈতিক ব্যবস্থা, সাংস্কৃতিক অবস্থা, ইত্যাদি বিষয়কে খুব স্পষ্ট, সহজ ও সুন্দর ভাবে সাজিয়েছেন।
____বইয়ের কিছু কথা :
লেখক বইটিকে পাঁচটি ভাগে ভাগ করেছেন।
**প্রথম ভাগে— তুরস্কে কাটানো লেখকের অভিজ্ঞতা বর্ননা করেন। লেখক যখন দেশ ছেড়ে ৫ হাজার ৬১৬ কিলোমিটার দূরে বসফরাসের তীরে যাওয়ার পথে পাড়ি জমান তখন লেখকের মনে একদিকে থাকে জন্মভূমির স্পর্শ, জীবনের বাঁকে বাঁকে গড়ে ওঠা স্মৃতি অন্যদিকে থাকে নতুন একটি দেশ সম্পর্কে নিজের কৌতুহল, পরিবেশের সাথে খাপ খাওয়ানোর চিন্তা। লেখকের এ বর্ণনায় যেনো মনে হয় পাঠক নিজেই তুরস্ক অভিযানে চলছে।
**দ্বিতীয় ভাগে— তুরস্কের বিভিন্ন শহরের ভ্রমণের কথা বলেন। ইস্তাম্বুল, আয়া সোফিয়া, তোপকাপি, দোলমাবাহচে প্রাসাদ, বসফরাস, আদালার ইত্যাদির বাস্তব বর্ণনা করেন। ঐতিহাসিক মসজিদ, স্থাপত্যকলা, বিখ্যাত শহর, নিদর্শন, বৃহত্তম শহরগুলোর কথাও লেখক জানিয়েছেন। এছাড়াও ইজমির, কোনিয়া, বুসরা, ভূমধ্যসাগর দেখার অভিজ্ঞতাও রয়েছে। হাজার বছরের মর্যাদাপূর্ণ স্থান আয়া সোফিয়ার ক্ষুদ্র ইতিহাস তুলে পাঠক মনকে নাড়া দিয়ে তুলেন। তোপকাপি, যে প্রাসাদ থেকে বিশ্ব শাসন করত উসমানিয়রা, সে প্রাসাদকে চোখের সামনে টেনে আনেন। পড়তে পড়তে চোখের সামনে ভেসে ওঠে সুলতান সুলাইমান কিংবা ফাতিহ সুলতান মেহমেদের বিচরণ।
**তৃতীয় ভাগে— তুরস্কের মৌলিক বিষয় যেমন রাষ্ট্রের মূল ভিত্তি, শিক্ষাব্যবস্থা, স্বাস্থ্যখাত, বীমা, যাতাযাতব্যবস্থা, নৌ/রেল/বিমান ব্যাবস্থা, তুরস্কের জনজীবন,ব্যাক্তি স্বাধীনতা, জননিরাপত্তার কথা আলোচনা করেছেন
**চতুর্থ ভাগে— তুর্কিদের খাবার- দাবার, সংস্কৃতি, ধর্মীয় অনুৃষ্ঠান, শহুরে জীবন, গ্রামীন জীবন, প্রাকৃতিক পরিচ্ছন্নতার কথা, আতিথেয়তা, এলাকাপ্রীতি, সামাজিক জীবন এমনকি প্রচলিত কুসংস্কারের কথাও জানান দেয়। বুক ক্যাফে, মিল্লি কিরাতহানে, বই পড়ার সংস্কৃতি, তাসবিহ ও আংটি তুরস্কের বহুল প্রচলিত দুটো বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
**পঞ্চম ভাগে— আতাতুর্কের কথা, সেক্যুলারিজমের সেকাল-একাল, তুরস্কের ইসলামি রাজনীতি, রাজনীতির বিভিন্ন কথা জানিয়ে দেয়। নির্বাচনকেন্দ্র, পরিচালনা, নির্বাচনী সংস্কৃতি আমাদের দেশ থেকে কতটা উন্নত, কতটা সমৃদ্ধ বইটি না পড়লে জানতাম না। এছাড়া এরদোয়ান কি সত্যিই চেঞ্জ মেকার! এ নিয়েও লেখকের মন্তব্য জানতে পারি। বইয়ের শেষে তুরস্কে বিদেশী শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষা সম্পর্কে মোটামুটি বিস্তারিত আলোচনা করেন।
____ভালোলাগা :
বইটি পড়ার পর তুরস্কের মতো সমৃদ্ধ একটি দেশে যাওয়ার স্বপ্ন অনেক মানুষেরই তৈরী হবে। বইটি পড়া শুরু করার পর আর রাখতে ইচ্ছা হয়নি। মনে হচ্ছিলো, এই বুঝি ১০৪টি কলামের ওপর দাঁড়িয়ে থাকা স্থাপত্যের দিকে অবাক চোখে তাকিয়ে আছি। আবার কখনো বাব-ই হুমায়ুনের গেটের ওপরে অঙ্কিত কুরআনের আয়াতসমৃদ্ধ দুটি ক্যালিগ্রাফি চিন্তার খোরাক হয়ে যায়। কখনো আবার লেখক দোলমাবাহচের প্রাসাদের জাঁকজমকের আড়ালে পতনের স্থিরচিত্র অঙ্কন করেছেন। তুরস্কের মানুষের মৌলিক চাহিদা, শিক্ষাব্যবস্থা, চিকিৎসা, যোগাযোগব্যবস্থা রীতিমত ভাবিয়ে তুলে। একটা দেশ কিভাবে সবদিক থেকেই ক্রমে ক্রমে সমৃদ্ধ হয়ে ওঠে সে বিষয়টি পড়তে পড়তেই বোঝা যায়।
____যাদের জন্য বইটি:
তুরস্ক সম্পর্কে জানার ইচ্ছা থাকলে প্রথমেই মৌলিক বই হিসেবে বইটি পড়তে হবে। তুরস্ক ইতিহাস সমৃদ্ধ একটি দেশ। নিজ দেশকে বিশ্বের একটি সমৃদ্ধশালী দেশে রূপান্তর করতে চাইলে অবশ্যই তুরস্ক হতে পারে রোল মডেল। তাছাড়া যাদের তুরস্কে উচ্চশিক্ষার ইচ্ছা আছে তাদের অবশ্যই অবশ্যই বইটি পড়া উচিত। বইয়ের পরিশিষ্ট অংশে বিদেশি শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার সুবিধা, যোগ্যতা, প্রক্রিয়া, সময়সীমা ছাড়াও তুরস্কের প্রথম সারির কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ও প্রয়োজনীয় তথ্য রয়েছে।
____লেখক পরিচিতি : ২০১৮ সালের বইমেলায় “এরদোয়ান : দ্যা চেঞ্জ মেকার” বইটি তুমুল পাঠকপ্রিয় হয়। “আমার দেখা তুরস্ক : বিশ্বব্যবস্থার নতুন শক্তি তুর্কি জাতির ভেতর- বাহির” লেখকের দ্বিতীয় গ্রন্থ। পিএইচডি করেছেন তুরস্কের গাজী ইউনিভার্সিটিতে। তার গবেষনার বিষয়, ‘আধুনিক যুগে রাষ্ট ধারণা এবং ইসলামি রাজনীতি।’ ইতিপূর্বে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগ থেকে অনার্স সম্পন্ন করেন।
_____পাঠ প্রতিক্রিয়া :
লেখকের বর্ননা, শব্দচয়ন, ভাষা খুব সুন্দর, সহজ, সাবলীল ছিলো। শুভ্র মলাটের প্রচ্ছদটা বইটিকে আলাদা সুন্দর করে তুলেছে। তাছাড়া তুরস্কের বিভিন্ন বিখ্যাত শহর,স্থান,স্থাপত্যকলা ইত্যাদির স্থিরচিত্র দিয়েছেন। ভেতরের পেপার খুব ভলো মানের ছিলো। লেখক বাংলাদেশের মানুষের কাছে তুরস্ককে চোখের সামনে ভাসিয়ে তোলার চেষ্টা করছেন। বইটি পড়তে পড়তে আমার মনে হচ্ছিলো আমি এই ক্ষুদ্র বইয়ে তুরস্কের পথে পথে হাঁটছি,কখনো গ্রামীন পরিবেশে, কখনো শহুরে পরিবেশে। ইসলাম থেকে কিভাবে সেক্যুলার এবং পুনরায় ইসলাম প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা সহ অটোম্যান শাসন এবং কামালিজম সকল বিষয় সুন্দরভাবে তুলে ধরেছেন। বইটির শুরুতে তুর্কি জাতির যে ইতিহাস তুলে ধরেছেন তাতে যে কোনো মানুষ তুরস্ক সম্পর্কে আরো জানতে আগ্রহবোধ করবে।