তিনিই আমার রব
তিনিই আমার রব বইটির রচয়িতা শায়খ আলী জাবের আল ফিফী (হাফিজাহুল্লাহ)। এই বইটি হচ্ছে মহান আল্লাহ সুবাহান ওয়া’ তা’য়ালার দশটি মহান নামের ব্যাখ্যা। আল্লাহ রাব্বুল আলা’মীনের দশটি নামকে জীবনের প্রতিটা দৃষ্টিকোণ, প্রতিটা ক্ষেত্র থেকে ব্যাখ্যা করতে লেখক পাঠকদের নিয়ে প্রবেশ করেছেন ভিন্ন এক জগতে। সেই জগতে কোন দুঃখ নেই, কোন কষ্ট নেই। সেই জগতে নেই কোন হতাশা, না পাওয়ার যাতনা। সেই জগত কেবল রব আর তাঁর বান্দার। সে জগতে রাজা হলেন আরশের অধিপতি, আর দাস তথা প্রজা হলো বান্দারা। সেখানে পৃথিবীর কোন মন্ত্রী নেই, প্রধানমন্ত্রী নেই। নেই কোন সেলেব্রেটি। সবাই সেখানে কেবলই বান্দা।
আল্লাহ কুরআনে বলেছেন তাঁকে তাঁর সুন্দর সুন্দর নামগুলো ধরে ডাকতে। কিন্তু কেনো তিনি এমনটা বলেছেন? কখনও কি চিন্তা করেছি? আল্লাহর নামগুলোর পেছনে কি নিগূঢ় এক রহস্য, কি যে এক মাহাত্ম্য লুকিয়ে আছে, তা কি আমরা জানি? জানিনা। লেখক এই বইটিতে সেই রহস্যের দ্বার উন্মোচনের চেষ্টা করেছেন খুব সুনিপুণভাবে।
তিনিই আমার রব বইটির ফ্ল্যাপ থেকেঃ
‘যে তৃষ্ণার্ত হৃদয় প্রতিক্ষায় থাকে এক পশলা বৃষ্টির, যে পথভোলা পথিক খুঁজে ফেরে পথ, সঁপে দেওয়ার তাড়নায় যে নয়নযুগল হয়ে ওঠে অশ্রুসিক্ত, পাপে নিমজ্জিত যে অন্তর অন্বেষণ করে বেড়ায় রহমতের বারিধারা, তাদের রবের কাছাকাছি নিয়ে যাওয়ার, তার সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার ক্ষুদ্র প্রয়াসই হলো তিনিই আমার রব’।
বি:দ্র: তিনিই আমার রব বইটি free pdf download করিতে চাহিয়া লেখকদের নিরুৎসাহিত করিবেন না
Rajib Hasan –
তিনিই আমার রব বইটার নাম শুনলেই কেমন জানি আপন আপন মনে হয়। মনে হয় চারপাশটা অগণিত নিয়ামাহ দিয়ে কেউ একজন ঘিরে রেখেছেন, যার কিছু হয়ত খালিচোখেই দেখতে পাই আর কিছু হাতরাই সীমিত প্রজ্ঞায়।
যিনিই সবচাইতে আপন, যিনিই আমাদের সব, আলহামদুলিল্লাহ “তিনিই আমার রব”।
যা কিছু হৃদয় ছুঁয়েছেঃ
কালো কাভারের বুকে সাদা করে লেখা ” তিনিই আমার রব”। অর্থ্যাৎ সকল আধার-কালোয় একজনই আমার আশার আলো, তিনিই আমার রব।
লেখকের বিনয় চোখে পড়ার মত । বারবার করে বুঝাতে চেয়েছেন মূল কিতাব ক্বুর’আন আর হাদীসই হলো জ্ঞান আহরণের চূড়ান্ত উৎস। এই কিতাব সে যায়গায় কোন কিতাবই নয়। বরং এই কিতাব পড়ে যেন আমরা ভাবতে শিখি “তিনিই আমার রব”। আর ভুলগুলি যেন ক্ষমা করে দেই।
তিনিই আমার রব কিতাবটিতে জোর দেওয়া হয়েছে নির্জলা তৌহিদের উপরে, আক্বিদার উপরে। যেটা সবচাইতে বেশী দরকার আমাদের এই আক্বিদা-সংকটের সময়ে। কিতাবটিতে বোঝানো হয়েছে সুখে-অসুখে, বিপদে-আপদে, আশা-নিরাশায় যিনি আমাকে আগলিয়ে রাখেন “তিনিই আমার রব”।
ইংরেজীতে একটা কথা আছে “saying no in a positive way” অর্থ্যাৎ “হ্যাঁ” বলার মধ্যে দিয়েও না বোঝানো যায়। শিরক থেকে বাঁচতে আমরা সবাইকে বলি “না”। বলি “শিরক করো না”। এই কিতাবটিতে আল্লাহ ছাড়া গইরুল্লাহ-র কাছে যেন কোন কিছু না চাই, বা গাইরুল্লাহ যে আমাদের কোন কাজেই আসেনা সেটাই বোঝানো হয়েছে। আকার – ইঙ্গিতে বোঝানো হয়েছে ” তিনিই আমার রব”, কাজে আসেনা বাকী, সব।
ইংরেজীতে আরেকটা কথা আছে ” Example is better than precept” তথা, উপদেশ দেওয়ার চাইতে উদাহরণ দেওয়া বেহতর”। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’য়ালার ৯৯টি নাম রয়েছে। আমরা ছোটবেলা থেকেই এগুলি শুনে আসছি। এখনও শুনছি। যেমন ধরুন, আস-সামাদ অর্থ্যাৎ স্বয়ংসম্পূর্ণ। সূরা ইখলাস তিলাওয়াত করিনি এমন দিন আছে বলে মনে হয়না। অথচ এর দুই নাম্বার আয়াতে “আল্লাহুস-সামাদ” কখনো হৃদয়ে দাগ কাটেনি। কখনো সেভাবে বোঝাও হয়নি। যেটা কিনা এই কিতাবে উদাহরণের মাধ্যমে বোঝানো হয়েছে কীভাবে রব স্বয়ংসম্পূর্ণ, কীভাবে তিনি সকলের অমুখাপেক্ষী – “তিনিই আমার রব”।
তিনিই আমার রব কিতাবটিতে আল্লাহ (সুবহানাহু ওয়া তা’য়ালা) – এর আসমা ওয়াস-সিফাত বা সুন্দর গূণবাচক নামগুলির অন্তর্নিহিত অর্থ উঠে এসেছে এক অভূতপূর্ব আঙ্গিকে। কিতাবে উল্লেখিত প্রতিটি নামের মাধ্যমে কীভাবে আমরা উপকৃত হচ্ছি, কীভাবে তিনি আমাদেরকে আগলিয়ে রাখছেন তা বারবার বারবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেওয়া হয়েছে, বলা হয়েছে ” তিনিই আমার রব”।
প্রতিটি উদাহরণ এতটাই হৃদয়ঘেষা আর সাবলীল যে আমার মত একজন সাধারণ পাঠকও ধরতে পারবেন যে “তিনিই আমার রব”।
কিতাবটি অনেকটা মাইক্রোসকোপের মত। এর মাধ্যমে আমার রবের অগণিত নিয়ামত আমি বড় আকারে দেখতে পাই। আমি দেখতে পাই তিনিই আমার রব যিনি সবার অলক্ষ্যে থেকে এভাবেই আমাকে ভালোবাসেন।
কিতাবটি থেকে দু’টি লাইন দিয়ে শেষ করছি বি-ইযনিল্লাহি তা’য়ালাঃ
“মাঝ আকাশে উড়ছি যখন মুক্ত বাধাহীন”
যাই না পড়ে রক্ষা করেন রব্বুল আ’লামীন”।
আর আমার পক্ষ থেকে দু’টি লাইন –
“জীবন যৌবন বেশ কাটালাম, নিয়ে দুনিয়ার সব;
“পথের বাঁকে আজ খুঁজে পেলাম, “তিনিই আমার রব”।
এই কিতাবের সাথে জড়িত সকলের জন্য দু’য়া ও ভালোবাসা।