ফিদাকা ইয়া রাসুলাল্লাহ
জবাব শুনে বৃদ্ধের শরীরটা কেঁপে উঠল। যেন হঠাৎ কোনো দেয়ালের সাথে ধাক্কা খেলেন। কোনোমতে নিজেকে সামলে নিয়ে ভাবলেন– কত আশা, কত জল্পনাকল্পনা নিয়ে এসেছিলাম! নবীজির সংস্পর্শ পেয়ে কতকিছু করব বলে ভেবে রেখেছিলেন! কিন্তু নবীজির তিরোধানের সংবাদ সব তামান্না নিমিষেই শেষ করে দিল। তবুও প্রিয়তমের সামান্য নিদর্শন পাওয়ার অভিপ্রায় ব্যথাতুর কন্ঠে বললেন,
‘তোমাদের মাঝে কি তাঁর কোনো সন্তানাদি আছেন?’ হজরত আলি তখন নবীজির মুয়াজ্জিন হজরত বেলালকে ডেকে বললেন, ‘আগন্তুককে ফাতেমার কাছে নিয়ে যাও’। বৃদ্ধকে সাইয়েদা ফাতেমার বাসগৃহে নিয়ে যাওয়া হলো। বৃদ্ধ নিজের পরিচয় দিলেন। ব্যক্ত করলেন হৃদয়ের তামান্নার কথা। সবশেষে নবীজির ‘কৃত্রিম’ সংস্পর্শ পেতে আরজ করলেন, ‘আমাকে কি নবীজির কোনো কাপড় এনে দেওয়া যাবে? একটু দেখতাম,একটু স্পর্শ করতাম!’
সাইয়েদা ফাতেমা রাদিয়াল্লাহু আনহা আগন্তুক নবীপ্রেমিকের ইচ্ছা পূরণে কোনো কার্পণ্য করলেন না। নবীজির নাতি হজরত হাসানকে ডেকে বললেন, ‘বাবা! ইনতেকালের সময় আল্লাহর রাসুলের পবিত্র শরীরে যে কাপড়টি ছিল, সেটি নিয়ে এসো’। হজরত হাসান পবিত্র সেই কাপড়টি নিয়ে এসে আগন্তুকের হাতে দিলেন। বৃদ্ধ কাপড়টি এমনভাবে নিলেন, যেন তিনি সাতরাজার ধন হাতে পেয়েছেন। কাপড়টি ছোট শিশুর মতো করে বুকে জড়িয়ে নিলেন। নাকে রেখে তার ঘ্রাণ নিলেন। চোখে-মুখে লাগিয়ে স্পর্শ অনুভব করার ব্যর্থ চেষ্টা করলেন। তার মুখে তখন প্রতিধ্বনিত হচ্ছিল,
‘এই কাপড়ের মালিকের উপর আমার মা-বাবা কুরবান, এই কাপড় পরিধানকারীর উপর আমার সবকিছু কুরবান’। এরপর আগন্তুক ভাবলেন — নবীজির স্পর্শ আর তাঁর ঘ্রাণ নাহয় পেলাম। কিন্তু তাঁকে দেখার স্বাদ যে মিটল না! এই ভেবে তিনি ছুটে চললেন হজরত আলি রাদিয়াল্লাহু আনহুর কাছে। ছোট শিশুর মতো আবদার জানিয়ে বললেন,
‘দয়া করে নবীজির পবিত্র মুখবায়বের বর্ণনা দিন। এমনভাবে দিবেন, যেন তাঁর মুখশ্রী আমার চোখের সামনে ভেসে ওঠে।’ এ কথা শুনে হজরত আলি নিজেকে সংবরণ করতে পারলেন না। ঝরঝর করে কেঁদে ফেললেন। কান্নারত কণ্ঠেই বললেন, ‘আগন্তুক! ওয়াল্লাহি, তুমি যদি আল্লাহর রাসুলের সাক্ষাতের প্রতি আগ্রহী হয়ে থাকো, তাহলে জেনে রাখো, তোমার চেয়ে আমি আরও বেশি আগ্রহী আমার প্রিয়তমের সাথে মিলিত হওয়ার জন্য!’
নবীপ্রেমিকদের জীবনোপাখ্যান নিয়ে শীঘ্রই আসছে— সালিম আব্দুল্লাহ রচিত ‘ফিদাকা ইয়া রাসুলাল্লাহ’।
বি:দ্র: ফিদাকা ইয়া রাসুলাল্লাহ বইটি free pdf download করিতে চাহিয়া লেখকদের নিরুৎসাহিত করিবেন না
Reviews
There are no reviews yet.