ইতিহাসের কান্না (শেষ মোগল সম্রাট পরিবারের করুণ কাহিনি) রাহনুমা প্রকাশনীর ইসলামি বই টি পেতে ইসলামিক বইঘর ডট কম এ অনলাইন অর্ডার করুন এখনই।
১। ইতিহাসের কান্না (শেষ মোগল সম্রাট পরিবারের করুণ কাহিনি) বইটি আপনি ফোন বা অনলাইন এর মাধ্যমে অর্ডার করার পর ইসলামিক বইঘর ডট কম আপনার সাথে যোগাযোগ করবে এবং আপনার বিলি ঠিকানা নিশ্চিত করবে ।
৩। ইসলামিক বইঘর এখন ঢাকা ও এর আশেপাশে ক্যাশ অন ডেলিভারী ও কুরিয়ার সার্ভিস এর মাধ্যমে বই পাঠাচ্ছে । এবং ঢাকার বাইরে কুরিয়ার সার্ভিস এর মাধ্যমে বই পাঠাচ্ছে ।
৫। বইয়ের মুল্য bKash, ডাচ বাংলা মোবাইল বা ক্যাশ অন ডেলিভারী এর মাধ্যমে প্রদান করা যাবে । বাংলাদেশের যে কোনো প্রান্তে ৪০ টাকায় বই পৌছে দেয়া হবে ।
যে কোন ইসলামী বই পেতে ইসলামিক বইঘর.কম এর সাথেই থাকুন
বি:দ্র: ইতিহাসের কান্না (শেষ মোগল সম্রাট পরিবারের করুণ কাহিনি) বইটি free pdf download করিতে চাহিয়া লেখকদের নিরুৎসাহিত করিবেন না
হাসান ইমরান –
বইটি শেষ মোঘল সম্রাট বাহাদুর শাহ যাফরের পরিবারের শাহজাদীদের কাহিনী নিয়ে রচিত হয়েছে। ১৮৫৭ এর সিপাহী বিদ্রোহের পর ইংরেজদের রোষানলে ছিল সম্রাট বাহাদুর শাহ যাফরের পরিবার। সম্রাট যাফরকে রেঙ্গুনে নির্বাসন দেওয়া হয় এবং শাহজাদাদের সকলকে হত্যার আদেশ দেওয়া হয়। ইংরেজরা এক একজন শাহজাদাদের কতল করে মুন্ডু হাজির করেছিল সম্রাট যাফরের সামনে। কতটা অবর্ণনীয় ছিল ব্যাপারটা! তখন বারকোশে কাটামুন্ডু দেখে বাদশাহ নির্লিপ্তভাবে বললেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ সার্থক হয়ে সামনে এলে। পুরুষ এই দিনের জন্যই সন্তান পালন করে।
মুসাব্বিরে ফিৎরাতে খাজা হাসান নিজামি ছিলেন ঐতিহাসিক বিদগ্ধ লেখক। বিশেষ করে সিপাহী বিদ্রোহের কাছাকাছি জন্ম হওয়ায় বিদ্রোহের পর বেঁচে থাকা অনেক শাহজাদীদের দেখেছেন। যারা তখন বস্তিতে জীবন যাপন করতেন। তাদের কাছে গিয়ে গিয়ে বিভিন্ন কাহিনী শুনতেন এবং লিখতেন। সিপাহী বিদ্রোহের সময় যখন ইংরেজদের বিজয় ঘনিয়ে আসছিল তখন কারো কোন হদিস ছিল না। দাস দাসীরা সবাই পালিয়েছিল, পুরুষ যারা ছিল তারাও দিল্লি ছেড়ে পলায়ন করছিল। ভাগ্যের ফেরে বেশিরভাগ শাহজাদীদেরই অবস্থা ছিল করুণ। প্রায় সবাইকে বস্তিবরণ করতে হয়েছিল। কাল যারা ছিল আরামের গদি আর শোশভিত পালঙ্কে আজ তারাই ছিন্ন বস্ত্রে উদ্বাস্তু।
বইটিতে ৬ জন শাহজাদীর কাহিনী আছে। যমানী কুলসুম বেগম তার স্বামী সহ বিদ্রোহের সময় নানা ঝামেলা আর ডাকাতদের কবলে পড়তে হয়েছে। শেষমেশ তারা মক্কায় চলে আসতে পেরেছিলেন। গুলবানু’র অবস্থা ছিল আরোও করুণ। শেষের জীবনে তাকে বস্তিতে ছেড়া কাপড়ে দেখা যেত। নারগিস নযর ‘যার আস্তানা ছিল জল মহলে। ইংরেজদের বহু লাথিঝাটা খেয়ে এক সাধারণ গ্রাম্য মুসলমানের সাথে বিয়ে হয়েছিল, সেই স্বামীকেও ইংরেজরা বিদ্রোহী সাব্যস্ত করে ধরে নিয়ে গিয়েছিল। তবুও তিনি একটা জীবন পেয়েছিলেন। তার বর্ণনায় এসেছে তাকে দাসীর চাইতে বেশী খাটতে হত। সাকীনা খানম ছিলেন প্রসব বেদনায়, পুরো মহলে কেউ ছিল না তখন, সবাই পালিয়েছে। উঠানে তার মৃত শশুরের লাশ। তার স্বামী আগেই মারা গিয়েছিল। সেই মুহুর্তেও ইংরেজরা তাকে রেহায় দেয়নি।
খাজা হাসান নিজামি বইটাতে সবারই শুরুর জীবনের ঐশ্বর্য্য এবং পরবর্তী করুণ কাহিনীগুলো সংক্ষিপ্তাকারে তুলে ধরেছেন। সবার শেষ জীবনের এমন করুণ অবস্থা ছিল যে কল্পনারও বাইরে। আমাদের জন্য শুধু এখানে আশ্চর্যবোধ, দুঃখবোধ, আর আল্লাহ তায়ালার দয়া বা করুণা ভাবনারই খোরাক আছে! তবে তাদের এই ভাগ্যাহান্বিত অবস্থায় আল্লাহর উপর বিশ্বাস আর এবাদতের কাহিনীগুলোও কল্পনাতীত!
মাওলানা ওবায়দুর রহমান খান নদভী বইটি রুপান্তর করেছেন। ভাষা বেশ সাবলীল এবং অল্প কথায় অনেক ঘটনার বিবরণ দেওয়ার যে দক্ষতা তা বেশ মুগ্ধ করার মত। মনেই হয় না অনুবাদ পড়ছি।